পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তুষার হোসেন। ডিবি কার্যালয়, পাবনা, ২ ডিসেম্বর
পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার তুষার হোসেন। ডিবি কার্যালয়, পাবনা, ২ ডিসেম্বর

ঈশ্বরদীতে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষে অস্ত্রধারী সেই তরুণ গ্রেপ্তার, পিস্তল জব্দ

পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করা সেই তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ধানবান্ধি এলাকার জে সি রোডের মতিন সাহেবের ঘাট-সংলগ্ন স্থান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার তরুণের নাম তুষার হোসেন (২১)। তিনি ঈশ্বরদী পৌর শহরের ভেলুপাড়া মহল্লার আবু তাহেরের ছেলে। তিনি জামায়াতের কর্মী বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাঁর কাছ থেকে একটি পিস্তল ও দুটি গুলি জব্দ করেছে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে তুষার পলাতক ছিলেন। তাঁর পরিচয় শনাক্তের পর থেকে তাঁকে খুঁজছিল পুলিশ। স্থানীয় সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তুষার নিজের হেফাজতে থাকা একটি অবৈধ পিস্তল ও দুটি কার্তুজ লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভেলুপাড়া এলাকায় মাটি খুঁড়ে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় সেগুলো জব্দ করা হয়।

জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় তুষারের বিরুদ্ধে সকালে ঈশ্বরদী থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা হয়েছে। বিকেলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ঈশ্বরদী থানার ওসি আ স ম আবদুর নূর প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর ওই যুবকের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ তাঁর পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা করে। তিনি জামায়াতের কর্মী বলে জানা গেছে।

পাবনা-৪ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলার আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। আসনটিতে জামায়াতের প্রার্থী জেলা শাখার আমির আবু তালেব মণ্ডল। দুজনই দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। উপজেলার চরগড়গড়ি গ্রামে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। দুই দিন আগে তাঁদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জামায়াতের প্রার্থী আবু তালেব মণ্ডল ওই এলাকায় গণসংযোগে যান। তখন দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি গুলি ছোড়া হয় এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হন। ঘটনার সময় এক তরুণকে পিস্তল হাতে গুলি ছোড়ার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জামায়াত ও বিএনপির পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা করা হয়েছে।