
শিক্ষাজীবনের শুরুতে তোমরা জিপিএ–৫ পেয়েছ। তবে শুধু ফল করলে হবে না, পাশাপাশি তোমাদের ভালো মানুষ হতে হবে। এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষাজীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় যেসব শিক্ষার্থী পড়ালেখায় মন দেয়, তাদের জীবন সুন্দর হয়।
আজ বৃহস্পতিবার চাঁদপুরে শিখো–প্রথম আলো আয়োজিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ও বিশিষ্টজনেরা এ কথাগুলো বলেন। চাঁদপুর শহরের তিন নদীর মোহনা–সংলগ্ন বড় স্টেশন মোলহেডে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নানা আয়োজনে মেতেছিল কৃতী শিক্ষার্থীরা।
‘স্বপ্ন দেখো জীবন গড়ো’ স্লোগানে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিখোর পৃষ্ঠপোষকতায় শুরু হয়েছে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। চাঁদপুরের এ আয়োজনে জেলার প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছিল।
সকাল আটটা থেকে অনুষ্ঠানস্থলে জড়ো হতে থাকে কৃতী শিক্ষার্থীরা। অনেক দিন পর বন্ধুর দেখা পেয়ে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তারা। একে অপরকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তোলে। নিবন্ধনের বিষয়টি নিশ্চিত করে তাদের হাতে ক্রেস্ট, খাবার ও উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানের মূল পর্ব। এরপর রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রথম আলো বন্ধুসভার চাঁদপুরের সভাপতি কামরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর চাঁদপুর প্রতিনিধি আলম পলাশ। তিনি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পেয়ার আহমেদ, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইকবালুর রহমান, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উপাচার্য পেয়ার আহমেদ বলেন, ‘আজকে যারা জিপিএ–৫ পেয়েছ, তোমরা ভালো লেখাপড়া করে একদিন কেউ আইনস্টাইন হবে, কেউ নিউটন হবে, কেউ বিশ্ববিখ্যাত গণিতবিদ হবে, আমরা এটাই চাই। সেই সঙ্গে আমাদের ছেলেমেয়েরা ভালো লেখাপড়া করে ভালো মানুষ হবে। ভালোভাবে লেখাপড়া না করলে একদিন জীবন দুঃখে পর্যবসিত হতে পারে।’
অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকবালুর রহমান বলেন, ‘আমরা জানি, এসএসসি ও এইচএসসি পড়ার সময় শিক্ষার্থীদের জন্য একটা কঠিন সময়। এ সময়ে যে শিক্ষার্থী ভালোভাবে পড়ালেখায় মন দেয়, তার জীবনটাও সুন্দর হয়। এ জন্য আমরা ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ও খারাপ বন্ধু থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকি।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য দেন মানিকুর রহমান ও জাহানারা রেশমা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশ করে খেরুদিয়া দেলোয়ার হোসেন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সুমাইয়া আক্তার, গৃদকালিন্দিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের রাইয়ানা বিনতে ফাতেমা, চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের অম্লান সাহা ও মাতৃপীঠ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের রুমান জারা।
অনুষ্ঠানটি গানে গানে মাতিয়ে তুলে রঙ্গের ঢোল বাংলা ব্যান্ড ও কৃতী শিক্ষার্থীরা। প্রথম আলোর থিম সং পরিবেশন করেন সোমা দত্তের নেতৃত্বে নৃত্যাঙ্গন ও বন্ধুসভার সদস্যরা। অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের মাদক, মিথ্যা ও মুখস্থকে না বলার শপথ পড়ান।
আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই কনকা–গ্রি এবং সহযোগিতায় ছিল কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, কোয়ালিটি গ্রুপ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, আকিজ টেলিকম লিমিটেড, আম্বার আইটি লিমিটেড, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।