
বর্ষা কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে ধুলায় ঢেকে যায় চারপাশ। প্রায় দুই দশক ধরে এমন অবস্থা চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম কলাউজান-বাংলাবাজার সড়কের। সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার করা হয়েছিল ২২ বছর আগে। এরপর আর সংস্কার না হওয়ায় দুর্ভোগ নিয়েই সড়কটি দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে মানুষকে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ৫০০ মিটারের সড়কটি ধুলায় আচ্ছন্ন। সড়কের দুই পাশে গাছপালা, ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ধুলার আস্তরণ জমেছে। অনেকই ধুলা থেকে বাঁচতে মুখে কাপড় বেঁধে রেখেছেন। সড়কটি স্থানীয়ভাবে বাংলাবাজার সড়ক নামে পরিচিত। এলাকাবাসী জানান, একসময় সড়কটিতে ইট বিছানো ছিল। এখন ইটেরই কোনো অস্তিত্ব নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে দরবেশহাট ডিসি সড়ক ধরে দেড় কিলোমিটার আগে নেয়াজেরটেক এলাকা। সেখান থেকে কানুরাম বাজারের সড়ক ধরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আরও আড়াই কিলোমিটার গেলে শুরু হয় পশ্চিম কলাউজান চার রাস্তার মোড়। এই মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে বাংলাবাজার সড়কটির শুরু। এর দৈর্ঘ্য ৫০০ মিটার আর প্রস্থ ৬ মিটার।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কটির আশপাশে পাঁচটি ইটভাটা রয়েছে। সন্ধ্যা থেকে সারা রাত এসব ইটভাটায় কয়েক শ ছোট-বড় ট্রাক যাতায়াত করে। এ কারণে সড়কটিতে ধুলা যেমন বেড়েছে, তেমনি তৈরি হয়েছে গর্ত। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এবং প্রায় ১০ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা নিয়মিত চলাচল করেন।
সড়কে অতিরিক্ত ধুলাবালুর কারণে বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ফলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, অ্যালার্জি, চোখ ও ত্বকের সমস্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও শ্বাসরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। —মো. ইকবাল হোসাইন, লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
ধুলার কারণে এলাকার মানুষ শ্বাসজনিত রোগে ভুগছেন বলে দাবি বাসিন্দাদের। লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, সড়কে অতিরিক্ত ধুলাবালুর কারণে বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ফলে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, অ্যালার্জি, চোখ ও ত্বকের সমস্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও শ্বাসরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
কলাউজান ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়ে রয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী নিয়মিত দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। আমি সম্প্রতি পরিষদের দায়িত্ব নিয়েছি। দায়িত্ব নেওয়ার পর সড়কটির বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আশা করি, দ্রুত সংস্কার করা হবে।’
জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কটি সংস্কার করার চেষ্টা চলছে। আপাতত কোনো প্রকল্প নেই। প্রকল্প এলে আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে সেটিকে সংস্কারের চেষ্টা করব।’