Thank you for trying Sticky AMP!!

‘কম্বল পাওনে এহন ঠান্ডায় গোনে আছান অইবে’

কম্বল পেয়ে হাসি ফুটেছে শীতার্তের মুখে। আজ রোববার বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে

বরিশাল নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কেডিসি বস্তির বাসিন্দা হেলাল খান (৬৮)। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও জীবিকার তাগিদে এখনো রিকশা চালান। এবার এত শীত পড়ছে যে রাতে ঘরে ঘুমাতে পারেন না। হেলাল খানের ভাষায়, ‘ঘরের বেড়ার ফাঁকফোকর দিয়া ফুর ফুর কইর‌্যা ঠান্ডা বাতাস আয়। পাতলা খাতায় (কাঁথা) শীত মানে না। খাওন জোডামু না গরম কাপুড় কিনমু?’

আজ রোববার প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে বিতরণ করা একটি কম্বল পেয়েছেন হেলাল। এরপর তিনি বললেন, ‘আপনেগো কম্বল পাওনে এহন ঠান্ডায় গোনে (থেকে) আছান অইবে।’

বরিশাল নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যান, কালিজিরা, সিঅ্যান্ডবি রোড, বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাণ্ডব নদের তীরে কৃষ্ণকাঠি গ্রামে শীতার্ত ২০৫ জন অসহায়, দুস্থ ও প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। বরিশাল বন্ধুসভার সদস্যরা এসব কম্বল বিতরণ করেন।

Also Read: ‘আজকা রাতত থ্যাকে কম্বল গাওত দিয়ে আরামে ঘুমাবার পারমু’

এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে রোববার বিকেলে ১০৫ জনের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। এ সময় শীতার্তদের হাতে কম্বল তুলে দেন বরিশালের হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ তারেক হাওলাদার, জেলা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি শাহ সাজেদা, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশ কর্মকর্তা সাজ্জাদ পারভেজ, তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান টপটেনের ব্যবস্থাপক ইমরান শেখ, জেলা বন্ধুসভার সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক নাইমুল ইসলাম।

কনকনে শীতে কম্বল উপহার পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শীতার্তরা

রোববার সকাল থেকে বরিশালে ছিল কনকনে শীত আর কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া। তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। কনকনে এই শীতে কম্বল উপহার পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন বৃদ্ধ হেলাল খানের মতো অসহায় অনেকে।  নগরের সাগরদী এলাকার নাজমা বেগমের (৪০) দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে তিনজনের সংসার। মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। কম্বল পেয়ে নাজমা বলেন, ‘ছোট্ট দুই গুড়াগাড়া (বাচ্চা) শীতে একছের কষ্ট পাইতো। কম্বল পাওনে এহন ওরা একটু শান্তিতে রাইতে ঘুমাইতে পারবে। কম্বল পাওনে মোর অনেক উপকার অইছে।’

Also Read: ‘চা–বাগানে বেজান ঠান্ডা, কম্বল পাইয়া ভালা হইলো’

এর আগে শনিবার বন্ধুসভার সদস্যরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে নগরের কেডিসি, আমতলা, সাগরদী, রসুলপুর, ধান গবেষণা সড়ক, কালিজিরা, সিঅ্যান্ডবি সড়ক এবং বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ইউনিয়নের পাণ্ডব ও রাঙামাটি নদ–নদীর তীরে কৃষ্ণকাঠি গ্রাম ঘুরে ঘুরে দরিদ্র পরিবারগুলোর তালিকা করেন। এরপর রোববার এসব কম্বল বিতরণ করা হয়।

কীর্তনখোলা নদীর মধ্যে জেগে ওঠা রসুলপুর বস্তি থেকে লাঠিতে ভর দিয়ে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসেন ফুলবানু বেগম (৮৫)। ছেলেমেয়েদের থেকে আলদা হয়ে এই চরের এক খুপরিতে একা থাকেন তিনি। কম্বল পেয়ে তাঁর মুখেও হাসির ঝিলিক। তিনি বলেন, ‘পোলাপান সব দূরে গ্যাছে, মুই এলহা মানুষ ক্যামনে বাঁচি কেউ খোঁজ নেয় না। তোমরাই খোঁজ নিয়া কম্বল দেলা, মনডা খুশিতে ভইর‌্যা গ্যাছে।’

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।

Also Read: কম্বল পেয়ে খুশি বেদে সম্প্রদায়ের মানুষ