
নাটোরে মাকে গলা কেটে হত্যা করার দায়ে ববি খাতুন (২০) নামের এক তরুণীকে ১০ বছর আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোর শিশু আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মুহাম্মদ আবদুর রহিম এই আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত তরুণী আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনার সময় ওই তরুণীর বয়স ছিল ১৬ বছর ২ মাস দিন। এ জন্য এই হত্যা মামলার বিচার শিশু আদালতে হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামির জন্য নিযুক্ত আইনজীবী রাশেদা খাতুন জানান, অভিযুক্ত ববি খাতুন ঘটনার দিন থেকে হাজতে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে জামিন পাওয়ার পরও দীর্ঘদিন আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। মামলাটি যুক্তিতর্কে আসার পর থেকে তিনি পলাতক আছেন। তবে রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত হয়ে তার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় আদালত তাঁকে শিশু আইনের সর্বোচ্চ সাজা দিয়েছেন।
জেলা শিশু আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত তরুণী পরবর্তী সময়ে যেদিন আদালতে হাজির হবেন বা পুলিশ যেদিন তাকে গ্রেপ্তার করবে, সেদিন থেকে সাজা কার্যকর হবে।
শিশু আদালতের সরকারি কৌঁসুলি দিনাই তাছরীন বলেন, এ অপরাধ সংঘটিত করার সময় অভিযুক্ত ববি খাতুন ওরফে নুশরাত জেরিন ববির বয়স ছিল ১৬ বছর ২ মাস দিন। ঘটনার দিন আটক হওয়ার পর তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। তাঁর জবানবন্দি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনা করে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় তাঁকে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন। আসামি পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা তামিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ মার্চ সন্ধ্যায় নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নাড়িবাড়ি উত্তরপাড়ার নজরুল ইসলামের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী সেলিনা খাতুনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত নারীর ভাই সুলতান আহমেদ খান বাদী হয়ে তাঁর ভাগনি (নিহত নারীর ছোট মেয়ে) ববি খাতুনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। গুরুদাসপুর থানার পুলিশ ওই দিনই ববিকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। মায়ের কাছে থাকা স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ব্লেড দিয়ে তাঁকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন আদালতে। মামলাটি তদন্ত শেষে একই বছর ২০ আগস্ট একমাত্র আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে মামলাটি বিচারের জন্য শিশু আদালতে এলে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আজ রায় ঘোষণা করা হয়।