
ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেছেন, তাঁদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে যে কিছু দুষ্কৃতকারী বাইরে থেকে এসেছিল, তারা এখনো গোপালগঞ্জে আছে। তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এখানকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না মনে হবে পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের জন্য সুখকর, ততক্ষণ পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে।
একই ব্রিফিংয়ে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার বলেন, গোপালগঞ্জের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা ও পর্যালোচনার পর কারফিউর সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এর আগে শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেন।
শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গতকাল চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ৪০-৫০ জন আহত আছেন। ২০ জন দুষ্কৃতকারীকে আটক করা হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষকে বলতে চাই, তাদের আতঙ্কিত বা ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। যারা দুষ্কৃতকারী আছে, আমরা তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি এবং যাদের চিহ্নিত করতে পারব, তাদের গ্রেপ্তারের আওতায় আনা হবে।’
একই ব্রিফিংয়ে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, এখন পর্যন্ত ২৫ জনের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে। যারা দুষ্কৃতকারী আছে, যারা গতকালের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনে জড়িত, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় মামলা হবে। বাইরে থেকে যারা এসেছে, তাদের সবাইকে এখনো চিহ্নিত করা যায়নি বলে তিনি জানান। তবে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন আছে, বাইরে থেকে কিছু লোকজন এসেছে।
নিহত চারজনের ময়নাতদন্ত না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসব।’ তিনি জানান, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স আগে থেকেই ছিল এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আরও অধিক সংখ্যক ফোর্স নিয়ে আসা হয়। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কত সদস্য বর্তমানে গোপালগঞ্জে কাজ করছেন, এ বিষয়ে কোনো সংখ্যা উল্লেখ করেননি তিনি। ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কারও গাফিলতি থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে বলেও জানান তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আবদুল মাবুদ, গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস এম তারেক সুলতান প্রমুখ।