পদ্মা নদীর ভাঙনে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে লঞ্চে যাত্রীদের ওঠানামা। গতকাল শনিবার সকালে পাটুরিয়া পুরোনো ট্রাক টার্মিনালের দক্ষিণে
পদ্মা নদীর ভাঙনে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকি নিয়ে চলছে লঞ্চে যাত্রীদের ওঠানামা। গতকাল শনিবার সকালে পাটুরিয়া পুরোনো ট্রাক টার্মিনালের দক্ষিণে

পাটুরিয়া লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন, লঞ্চে যাত্রীদের ঝুঁকিপূর্ণ ওঠানামা

পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পাটুরিয়া লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হওয়ায় অন্য স্থানে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে যাত্রী ওঠানামা করানো হচ্ছে। আগের লঞ্চঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে যাত্রীদের লঞ্চে উঠতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যা দেখা দিলেও কর্তৃপক্ষ আগাম কোনো প্রস্তুতি নেয় না। এবারও যথাসময়ে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বড় ধরনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

লঞ্চঘাট–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌপথে ২৪টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার হয়। গত দুই সপ্তাহে নদীতে পানি বেড়ে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ক সপ্তাহ আগে থেকে পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে ভাঙন শুরু হয়। এরপর গত মঙ্গলবার দুপুরে লঞ্চঘাটের পশ্চিম পাশের জেটি সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। অপর জেটিও নদীতে ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়। এতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে মঙ্গলবার বিকেলে লঞ্চগুলো ঘাটের পশ্চিমে ২ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনে নিয়ে রাখা হয়। সেখানে কোনোরকমে যাত্রীদের লঞ্চে ওঠানামা করানো হচ্ছিল। তবে গতকাল শুক্রবার বিকেলে ২ নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এতে পন্টুনের নিচ থেকে মাটি ধসে যায় এবং পন্টুনটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর লঞ্চঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে লঞ্চগুলো রাখা হয়। সেখানে কাঠের পাটাতনের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে ওঠানামা করছেন যাত্রীরা।

লঞ্চঘাট নদীতে বিলীন হওয়ায় যাত্রীরা ভোগান্তির পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন লঞ্চের মালিক ও শ্রমিকেরা। পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের সুপারভাইজার পান্না লাল নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, অধিকাংশ যাত্রী ফেরিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ পারাপার হচ্ছেন। এতে লঞ্চের যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় তাঁদের আয় কমে গেছে।

ঢাকার সাভারে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার আরিফ হোসেন। গতকাল শনিবার সকালে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। বাস থেকে নেমে লঞ্চঘাটে যাওয়ার পর দেখেন, ঘাট ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তিনি রিকশায় করে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নদীর তীরসংলগ্ন লঞ্চের কাছে গিয়ে নামেন। সেখানে কাদা মাড়িয়ে কাঠের পাটাতনের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চে ওঠেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা নদীবন্দরের উপপরিচালক মো. সেলিম শেখ বলেন, নদীভাঙনের ফলে লঞ্চঘাটটি ভেঙে যাওয়ায় পাশে ২ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুন দিয়ে লঞ্চে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছিল। তবে ওই ঘাটও ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় পুরোনো ট্রাক টার্মিনালের দক্ষিণে নদীর তীরে অস্থায়ীভাবে লঞ্চে যাত্রী ওঠানামার কাজ হচ্ছে। আশপাশের কোনো স্থানে স্থায়ীভাবে ঘাট নির্মাণ করা যায় কি না, তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।