
নারায়ণগঞ্জের চা বিক্রেতা ইদ্রিস মোল্লার (৭৬) পাশে দাঁড়িয়েছে কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড। গতকাল রোববার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে কোহিনূর কেমিক্যালের প্রধান কার্যালয়ে ইদ্রিস মোল্লার হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম। যেকোনো প্রয়োজনে ইদ্রিস মোল্লার পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ থেকে ইদ্রিস মোল্লাকে গতকাল দুপুরে তেজগাঁওয়ে নিয়ে যান কোহিনূর কেমিক্যালের একজন প্রতিনিধি। বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির সম্মেলনকক্ষে ইদ্রিস মোল্লার পরিবারের খবরাখবর নেন রেজাউল করিম। পরে তিনি ইদ্রিস মোল্লার হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেন এবং তাঁর পরিবারের শুভকামনা জানান। এ সময় কোহিনূর কেমিক্যালের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি (ব্র্যান্ড) গোলাম কিবরিয়া সরকার উপস্থিত ছিলেন।
আর্থিক সহায়তা পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ইদ্রিস মোল্লা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এভাবে নিজের জীবনের গল্প পত্রিকায় ছাপা হবে এবং তা দেখে তাঁকে কেউ সহায়তা করবে, এমনটা তিনি কখনো ভাবেননি। দীর্ঘদিন তিনি ঠান্ডাজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন। এই টাকা দিয়ে চিকিৎসার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসাকে বড় করার উদ্যোগ নেবেন।
গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন, ‘প্রথম আলোর অনলাইন থেকে আমাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহোদয় প্রতিবেদনটি পড়ার পর ইদ্রিস মোল্লার পাশে দাঁড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমরা তখন আমাদের নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক বিপণন ব্যবস্থাপকের (আরএম) মাধ্যমে ইদ্রিস মোল্লাকে খুঁজে বের করি। পরে তাঁকে আমাদের তেজগাঁও কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। আমরা তাঁকে সহায়তা করেছি। প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও আমরা তাঁর পাশে থাকব।’
প্রান্তিক মানুষের গল্প তুলে আনার জন্য গোলাম কিবরিয়া সরকার প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘প্রথম আলো দেশের আনাচকানাচে খুঁজে খুঁজে প্রান্তিক মানুষের দুঃখ–দুর্দশার চিত্র তুলে আনে। আগেও প্রথম আলোর প্রতিবেদন দেখে কোহিনূর কেমিক্যাল নানান সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভবিষ্যতেও আমাদের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।’
৬ জানুয়ারি ‘শহর ধনী অইলো, আমরা গরিবই রইয়া গেলোম’ শিরোনামে ইদ্রিস মোল্লাকে নিয়ে প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মুন্সিগঞ্জে অবস্থাপন্ন কৃষক পরিবারের জন্ম নেওয়া ইদ্রিস মোল্লা আদম পাচারকারী চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে এখন সর্বস্বান্ত। ভিটেমাটিহীন ইদ্রিস মোল্লা দুই ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে এখন নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগে বসবাস করেন। দুই ছেলের আয়ে সংসার চলে না। বৃদ্ধ বয়সে তিনি রাতভর শহরের গ্রিন্ডলেস ব্যাংকের মোড়ে বসে চা বিক্রি করেন।