Thank you for trying Sticky AMP!!

নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ফরিদপুর-১ আসনের বিএনএম–মনোনীত প্রার্থী শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। গতকাল সন্ধ্যায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রাজাপুর এলাকায়

নির্বাচনে না এসে তাঁরা পিটার হাসের ফর্মুলা বেছে নিয়েছিলেন: শাহ জাফর

বিএনপি নির্বাচনে না এসে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ফর্মুলা বেছে নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। বিএনপির দলত্যাগী এই নেতা বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আমি বারবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু তাঁরা নির্বাচনে আসেননি। তাঁরা পিটার হাসের ফর্মুলা বেছে নিয়েছিলেন।’

গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল ইউনিয়নের রাজাপুর বাজারে এক নির্বাচনী সভায় এ কথা বলেন শাহ জাফর। চতুল ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি মো. দাউদ লস্করের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

Also Read: বিএনপি ছেড়ে বিএনএমে যোগ দিলেন সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাফর

ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা-মধুখালী) আসনে বিএনএম–মনোনীত প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন শাহ জাফর। নিজেকে ‘নির্বাচনমুখী ব্যক্তি’ উল্লেখ করে গতকালের সভায় তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভেবেছিল পিটার হাস তত্ত্বাবধায়ক সরকার করে দেবেন। আমেরিকা বাংলাদেশের সবকিছু করে দেবে। কিন্তু পিটার হাস কিছুদিন আমেরিকা ঘুরে এসে একেবারে চুপ হয়ে গেলেন। অপর দিকে দেশের পরিস্থিতি ধানের শীষের অনুকূলে ছিল। এ নির্বাচনে অংশ নিলে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জিতেও যেতে পারত। তা নাহলে প্রধান বিরোধী দল হতে পারত। সে অবস্থায় খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহার করা কিংবা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার পথ সুগম হতো।’

‘ধানের শীষ’ মার্কা বাদ দিয়ে ‘নোঙর’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শাহ জাফর বলেন, ‘এ অবস্থায় আমার মনে হলো আর রাজনীতি করব না। এত হানাহানি আর ভালো লাগে না। এমনই অবস্থায় বিএনএম নেতারা আমার কাছে আসেন। তাঁদের সঙ্গে বিএনপির সাবেক ২ মন্ত্রী, ১৬ সংসদ সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক—সব পেশার লোকই ছিলেন। এ অবস্থায় যেহেতু আমি নির্বাচনমুখী, এ কারণে আমি নির্বাচন করা ও দলীয় উচ্চপদ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’

Also Read: মহাখালীর ‘ছোট কক্ষ’ থেকে গুলশানের ‘আলিশান’ কার্যালয়ে বিএনএম

নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ফরিদপুর-১ আসনের বিএনএম–মনোনীত প্রার্থী শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। গতকাল সন্ধ্যায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রাজাপুর এলাকায়

শাহ জাফর বলেন, ‘আমি অর্থ বা নিজের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি দেখেছি, আমার নির্বাচনী এলাকায় ৩০ হাজার নেতা-কর্মী হামলা-মামলা ও পুলিশের হয়রানির কারণে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ কেউ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে আত্মগোপন করে আছেন। এ জন্য নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে আমি তিনটি শর্ত দিয়েছিলাম। শর্তগুলো হলো, যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে, যেসব মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে এবং কারও প্রতি কোনো রকম পুলিশি হয়রানি চলবে না। আর এ কারণেই আমি ধানের শীষ বাদ দিয়ে নোঙর প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেই।’ শাহ জাফর বলেন, ‘আজ আমি শান্তিতে জনসভা করতে পারছি। অথচ এক মাস আগেও এ পরিস্থিতি ছিল না। আমার নির্বাচনী এলাকায় পুলিশের হুমকি, হয়রানি, জুলুম নেই। আমি বিএনপির বিরোধিতার মুখে পড়িনি।’

২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতে করে ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জেতানো হয়েছে অভিযোগ করে শাহ জাফর আরও বলেন, ‘আমি চারবার এ আসনের সংসদ সদস্য ছিলাম। কাউকে চাকরি দেওয়ার জন্য কোনো টাকা নিইনি। আমার উপলব্ধি হয়েছে, যদি সংসদ সদস্য টাকা খায়, তাহলে ইউএনও ও ওসি টাকা খাবে, সেটেলমেন্ট অফিস ও সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ চলবে। তাই আমি সংসদ সদস্য হয়ে এ ঘুষ বন্ধ করতে চাই। আমি চাই এলাকার মানুষ শান্তিতে থাকুক, স্বস্তিতে থাকুক। আমি নির্বাচিত হলে এ তিন উপজেলায় কোনো ঘুষ চলবে না। যদি কোনো কর্মকর্তা ঘুষ খান এবং এ খবর যদি আমি জানতে পারি, তাহলে সাত দিনের মধ্যে তাঁর শাস্তির ব্যবস্থা করব।’

Also Read: বহু জল্পনা–কল্পনার পর মাত্র ৮২ আসনে প্রার্থী দিতে পারল বিএনএম

সভায় আরও বক্তব্য দেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কুমার, আন্তজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য মাহবুবুল আলম, কামরুজ্জামান, মো. আবুল হোসেন, মো. সমছেল, এমদাদ হক সিকদার প্রমুখ।

ফরিদপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান। এ ছাড়া প্রার্থী হয়েছেন মো. নুর ইসলাম সিকদার (বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি), মো. আক্তারজ্জামান খান (জাতীয় পার্টি) ও মোহাম্মদ আরিফুর রহমান (স্বতন্ত্র)।