কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১১) বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় মামলার বাদী এক নারীকে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে খোশকান্দি গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী নারী উপজেলার খোশকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মো. জহির খানকে (৫৫) আসামি করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি শ্বাস রোধ করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। দাউদকান্দি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার বাদী নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাদীকে একা পেয়ে মামলার আসামি দাউদকান্দি উপজেলার খোশকান্দি গ্রামের জিদান খানের বাবা মো. জহির খান বাদীকে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। বাদীর চিৎকার–চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে জহির খান পালিয়ে যান। পরে আহত নারীকে উদ্ধার করে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রূপা ঘোষ জানান, আহত নারীর গলা, মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মামলার বাদীকে শ্বাস রোধ করে হত্যাচেষ্টা করার অভিযোগের বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনে কল দিলে অন্য এক ব্যক্তি ধরে বলেন মুঠোফোনের নম্বরটি জহির খানের নয়।
জানা যায়, গত ১৫ নভেম্বর উপজেলার খোশকান্দি গ্রামে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বেদম পেটানো হয়। ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও চিত্র ধারণ করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা বাদী হয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চারজনের নাম উল্লেখ এবং দু-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ১৮ নভেম্বর একটি মামলা করেন।
শিশুটির মা প্রথম আলোকে জানান, ১৫ নভেম্বর শেলী আক্তার নামে এক নারী তাঁর দুটি হাঁস না পেয়ে তাঁর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। ঝগড়ার এক পর্যায়ে তাঁর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে দিনদুপুরে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পেটান শেলী, জিদান খান, ইমরান খান, মিনা আক্তারসহ আরও কয়েকজন। তারা শিশুটিকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন এবং নির্যাতনের ছবি-ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। বেদম প্রহারে ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্কুলছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি জিদান খান, ইমরান খান, শেলী আক্তার ও মিনা আক্তার ঘটনার পর থেকে আত্মগোপন করেছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ। এ জন্য তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।