বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের অপসারণ দাবি এবং ২২ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) দায়েরের প্রতিবাদে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে মশালমিছিল শেষে তাঁরা মহাসড়কে বসে পড়েন।
রাত সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবরোধ চলছিল। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধে মহাসড়কের উভয় পাশে শতাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। এ কারণে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
অবরোধকারী শিক্ষার্থীরা সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের অপসারণ, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অপসারণ করা অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনকে পুনর্বহাল, ‘স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের’ জন্য উপাচার্যকে ক্ষমা প্রার্থনা এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘হামলা-মামলা দিয়ে শিক্ষার্থীদের দমন করা যাবে না। স্বৈরাচারী সরকারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও বিরোধী মত দমনে একই কৌশল গ্রহণ করেছে।’
এদিকে গুরুত্বপূর্ণ এই মহাসড়ক অবরোধ করায় মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়েছে। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। আটকে পড়া এক যাত্রী আবদুর রহমান বলেন, ‘পটুয়াখালী যাওয়ার পথে এমন অবস্থায় পড়ব বুঝিনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এ ধরনের মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগে ফেলার কী যুক্তি থাকতে পারে।’
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
গত রোববার রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা দিয়েছিলেন একদল শিক্ষার্থী। তাঁদের দাবি, রেজিস্ট্রার ফ্যাসিস্টদের দোসর ও ভোলার মনপুরা উপজেলার আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. মুহসিন উদ্দীনকে ১৩ এপ্রিল সিন্ডিকেট সদস্য ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পর থেকেই মুহসিন উদ্দীনকে স্বপদে বহাল করার দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন একদল শিক্ষার্থী। আন্দোলনকারীরা চার দফা দাবি দিয়ে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন।
রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা দেওয়া ও তাঁর কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কে এম সানোয়ার পারভেজ সোমবার বন্দর থানায় ২২ জন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জিডি করেন। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছেন এবং অরাজকতা সৃষ্টি করছেন।