Thank you for trying Sticky AMP!!

নোয়াখালীতে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্টকে কুপিয়ে হত্যা

শাহেদুজ্জামান

নোয়াখালী-২ (সেনবাগ ও সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক এজেন্টকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মির্জানগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহেদুজ্জামান ওরফে পলাশ (৩৫) পূর্ব মির্জানগর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। তবে কে বা কারা শাহেদুজ্জামানকে খুন করেছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।

শাহেদুজ্জামান পূর্ব মির্জানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে কাঁচি প্রতীকের পোলিং এজেন্ট ছিলেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহা. আতাউর রহমান ভূঁইয়া। তিনি অভিযোগ করেছেন, ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট ও অবৈধ প্রভাব বিস্তারের প্রতিবাদ করায় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের দিন থেকে স্থানীয় নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা শাহেদুজ্জামানকে নানা হুমকি দিয়ে আসছেন। এই জেরে তাঁকে খুন করা হতে পারে বলে তাঁর ধারণা। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন নৌকা প্রতীকের বিজয়ী সংসদ সদস্য মোরশেদ আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তিনি গত ১০ বছর নোয়াখালী-২ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। দীর্ঘ এই সময়ে এলাকায় কোনো ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা কিংবা হত্যাকাণ্ড ঘটেনি। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী তাঁকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে অপপ্রচারে নেমেছেন। তবে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানার পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য সোনাইমুড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

Also Read: ভোটকেন্দ্রের পাশে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে পূর্ব মির্জানগর গ্রামের নিজ বাড়ির পাশের খালি জায়গায় রক্তাক্ত অবস্থায় শাহেদুজ্জামানের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তাঁর কপাল ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সোনাইমুড়ী থানা–পুলিশকে অবহিত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

শাহেদুজ্জামানের স্ত্রীর বরাত দিয়ে সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মোহাম্মদ বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, শাহেদুজ্জামান একসময় বিদেশে থাকতেন। দেশে আসার পর এলাকায় মাছ ও মুরগির খামার করেন। স্ত্রী নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। দিনের বেলায় নিজের বাড়িতে আসতেন এবং খামার দেখাশোনা করতেন। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে শাহেদুজ্জামানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর মুঠোফোনে ভিডিও কলে সর্বশেষ কথা হয়েছিল।

Also Read: নোয়াখালীর চার আসনে নৌকা-স্বতন্ত্র হাড্ডাহাড্ডি

তবে কে বা কারা শাহেদুজ্জামানকে খুন করেছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ওসি বখতিয়ার উদ্দিন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহত শাহেদুজ্জামান সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিলেন কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন। তবে কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এ বিষয়ে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে নোয়াখালী-২ আসনে মোরশেদ আলম নৌকা প্রতীকে ৫৬ হাজার ১৮৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন। স্বতন্ত্র (কাঁচি) প্রার্থী আতাউর রহমান ভূঁইয়া পান ৫২ হাজার ৮৬৩ ভোট।

নৌকার ক্যাম্পে আগুন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ
নোয়াখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ
স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন, গুলির খোসা উদ্ধার