Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলেটে এবার বিএনপির ৪৩ নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কার

সিলেট জেলার মানচিত্র

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বর্তমান ও সাবেক ৪৩ নেতাকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষর করা চিঠিতে এ বহিষ্কারের কথা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়।

এর আগে গত শনিবার রাতে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় বিএনপি নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল দলটি। বিএনপি জানিয়েছে, কারণ দর্শানোর নোটিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের জবাব চেয়ে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ওই সময়ের মধ্যে পাঁচজন নেতা জবাব দিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে কেউ সরে আসেননি। এ কারণে ওই ৪৩ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ৪৩ নেতাকে বহিষ্কারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির পাঠানো এসব চিঠি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। রাতে হোয়াটসঅ্যাপে এবং মঙ্গলবার সশরীর এসব চিঠি পৌঁছে দেওয়া হবে। এর আগে ওই ৪৩ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। অনেকে নোটিশের জবাব দিলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে আসতে অস্বীকৃতি জানান।

বিএনপি জানিয়েছে, দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি একাত্মতা জানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী অনেক দিন রহস্য রাখার পর শেষ পর্যন্ত গত ২০ মে নির্বাচন বর্জন করেন। এ ছাড়া কাউন্সিলর পদেও দলগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার দলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সতর্ক করে বিএনপি সিলেটের ৩২ নেতাকে চিঠি দিয়েছিল। দলের এমন অবস্থানের মুখে সেখানে কাউন্সিলর পদে ভোট করতে আগ্রহী ১৫ জন নেতা অবশেষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। এরপরও সিলেটে দলটির ৪২ জন নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সোমবার এসব নেতাকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপির যে ৪২ জন নেতা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, এর মধ্যে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য মো. ছালাহ উদ্দিন মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। অন্যরা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব নেতার মধ্যে জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতা রয়েছেন।

কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন লিখেছেন, ‘আমি এবার সিলেট সিটির নির্বাচন করতে ইচ্ছুক ছিলাম না। কিন্তু জনগণের চাপের মুখে আমার নির্বাচন করতে হচ্ছে। জনগণের ভাষ্য নৌকাকে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে দেওয়া যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে জনগণের ইচ্ছাকে মর্যাদা দিতে গিয়ে আমাকে এ নির্বাচন করতে হচ্ছে। এই অবৈধ সরকারের পতন ঘটাতে আমাকে সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হওয়া প্রয়োজন।’

এদিকে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি রোকসানা বেগম নোটিশের জবাবে লিখেছেন, ‘ভোটারদের চাহিদার দিক বিবেচনায় নিয়ে আমার এ প্রার্থী হওয়াকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আমি ওয়াদা করছি, বর্তমানের মতো ভবিষ্যতেও দলের আদর্শের প্রতি অবিচল থাকব।’

যোগাযোগ করলে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সব ধরনের নির্বাচন বর্জন করেছে। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় সংশ্লিষ্ট নেতাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। এসব বহিষ্কৃত নেতার পক্ষে যেন দলের কোনো পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা প্রচার-প্রচারণায় না যান, সেটাও আমরা প্রত্যাশা করছি।’