ছাত্রদল নেতার পোস্টের (বাঁয়ে) পর ঘটনাস্থলে গিয়ে জামায়াতের নেতা–কর্মীদের ভূরিভোজের (ডানে) আয়োজন করতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছাত্রদল নেতার পোস্টের (বাঁয়ে) পর ঘটনাস্থলে গিয়ে জামায়াতের নেতা–কর্মীদের ভূরিভোজের (ডানে) আয়োজন করতে দেখা যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে

রাকসু নির্বাচন

অস্ত্র বিতরণ ও বোমা বিস্ফোরণের গুজব, দুটি ভিডিওই ভুয়া বলছে পুলিশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। একটিতে প্রকাশ্যে অস্ত্র বিতরণের দাবি ও অন্যটিতে বোমা বিস্ফোরণের দৃশ্য দেখানো হয়। দুটি ঘটনাকে গুজব ও ভিত্তিহীন বলছে রাজশাহী মহানগর পুলিশ।

মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জনমনে আতঙ্ক ছড়াতে একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসব ভুয়া ও বানোয়াট ভিডিও প্রচার করছে। এর মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে বানানো এবং অস্ত্র বিতরণের ভিডিওটি দূর থেকে ধারণ করা একটি অস্পষ্ট দৃশ্য, যাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে মহানগর পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অস্ত্র বিতরণের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, রাকসু নির্বাচনের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের বিপরীতে একটি বাগানে কিছু লোকের আনাগোনার একটি অস্পষ্ট ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়ে দাবি করা হয়, একটি রাজনৈতিক দলের লোকজন সেখানে প্রকাশ্যে অস্ত্র বিতরণ করছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়নি। সেখানে স্থানীয় উৎসুক লোকজন ও বিভিন্ন দলের সমর্থকেরা বাগানে গাছের ছায়ায় আড্ডা দিচ্ছিলেন ও খাওয়াদাওয়া করছিলেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনাস্থলের খুব কাছেই পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্যরা টহলে ছিলেন। গণমাধ্যমকর্মী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে এমন একটি প্রকাশ্য স্থানে অস্ত্র বিতরণ করা বাস্তবসম্মত নয়। একটি মহল সাধারণ মানুষের আড্ডা ও খাওয়ার দৃশ্যকে দূর থেকে ধারণ করে অস্ত্র বিতরণের গুজব ছড়িয়েছে।

রাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস–সংলগ্ন বিনোদপুরে শামিয়ানা টানিয়ে জামায়াত (বাঁয়ে) ও বিএনপির নেতা–কর্মীদের অবস্থান। বৃহস্পতিবার দুপুরে

বোমা বিস্ফোরণের ভিডিওটি এআই-নির্মিত

এদিকে রাকসু নির্বাচন চলাকালে বোমা বিস্ফোরণের আরেকটি ভিডিও নিয়ে পৃথক আরেকটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে মহানগর। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি গণমাধ্যমের সঙ্গে ক্যাম্পাসে কথা বলার সময় হঠাৎ একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মহানগর পুলিশের সাইবার অপরাধ দল তদন্ত শুরু করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও ফ্যাক্ট-চেক শেষে তারা নিশ্চিত হয় যে দৃশ্যটি সম্পূর্ণ এআই ব্যবহার করে বানানো একটি ভুয়া ভিডিও। জনমনে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই এটি প্রচার করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।

দুটি ঘটনার পরই মহানগর পুলিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের সতর্ক করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও গুজবমূলক বিষয় পোস্ট করা, শেয়ার করা, এমনকি লাইক বা কমেন্ট করাও ফৌজদারি অপরাধ। গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. গাজিউর রহমান বলেন, বাগানে অস্ত্র বিতরণের ভিডিওটি গুজব। আর বোমা বিস্ফোরণের ভিডিওটি ভুয়া। এটি এআই দিয়ে বানানো। তাঁরা এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।