
‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান, স্বপ্ন জয়ে অটল প্রাণ’ স্লোগান নিয়ে সোমবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে ক্যাম্পাসে র্যালি, চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সোমবার সকালে শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। উপাচার্য মো. রেজাউল করিম বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড় ও ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। এরপর শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে চারুকলা অনুষদের আয়োজনে ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম ২০২৫’ শীর্ষক একটি চারুকলা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপাচার্য মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘২০০৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর সেই পদক্ষেপের ফলেই আজ আমরা এখানে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছি। গত এক বছরে আমাদের অর্জন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই সবচেয়ে ভালো জানেন। আমরা যখন দায়িত্ব নিই, তখন শিক্ষার্থীসংশ্লিষ্ট বাজেট ছিল খুবই সীমিত। এখন আমরা সেই বাজেট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে পেরেছি।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা একাডেমিক মানোন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে কাজ করে যাব। নিয়মিত ক্লাস মনিটরিং–ব্যবস্থা চালু থাকবে ও ফলাফল প্রকাশে যেন কোনো বিলম্ব না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের গবেষণায় শিক্ষার্থীদের গবেষণা সহকারী হিসেবে যুক্ত করা হচ্ছে, যাতে তারা হাতে-কলমে গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।’
উপাচার্য আরও জানান, শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গবেষণা সপ্তাহ’ পালন করা হবে, যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়কেই গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করবে। শিক্ষার্থীদের আবাসনসংকট দূর করা সময়সাপেক্ষ কাজ হলেও এই সমস্যা সমাধানে তাঁরা আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। আশা করা যায়, আগামী বছরের মধ্যে আংশিক সমাধান সম্ভব হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মোশাররাফ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সাবিনা শরমীন ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রইছ উদ্দীন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে ‘জুলাই বিপ্লব–২০২৪ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ (সুযোগ–সমস্যা–উত্তরণ)’ শীর্ষক প্রবন্ধ সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ও এ বছর ২০২৫ সালে আয়োজিত ‘বার্ষিক শিল্পকর্ম প্রদর্শনী’তে অংশগ্রহণকারী বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।