Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকায় দূষণ কমে বায়ুমানের উন্নতি

ধুলায় আচ্ছন্ন ঢাকার বাতাস। তৈরি হচ্ছে মানুষের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতা। ফাইল ছবি

এক মাস ধরেই ঢাকার বায়ুদূষণ ক্রমাগতভাবে কমছে। বায়ুমান সূচক অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকার অবস্থান ছিল শিল্পোন্নত দেশের শহরের আশপাশে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলো এখন বন্ধ। এটা ঢাকার বায়ুমানের উন্নতির বড় একটি কারণ।

গত বছরের অক্টোবর থেকে দূষিত বাতাসের শহরের দিক থেকে ঢাকার সঙ্গী ছিল পাকিস্তানের করাচি ও ভারতের দিল্লি। এসব শহর এখনো শীর্ষ ১০ দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় আছে। আর ঢাকা নেমে গেছে ৫৮তম স্থানে। বৈশ্বিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণে এটা দেখা গেছে।

গতকাল এয়ার ভিজ্যুয়ালের বায়ুমান সূচক অনুযায়ী, ঢাকার আশপাশে থাকা শহরগুলোর মধ্যে আছে পোল্যান্ডের ওয়ারশ (৫৭তম) ও যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার (৫৯তম)। আর বায়ুদূষণে শীর্ষ পাঁচে থাকা শহরগুলো হলো পাকিস্তানের করাচি, ইরানের তেহরান, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও ভারতের দিল্লি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান বিভাগের কর্মকর্তা ও গবেষকেরা বলছেন, ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলো এখন বন্ধ। ধুলার বড় উৎস মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ বড় ভবন ও অবকাঠামোর নির্মাণকাজ বন্ধ। যানবাহন চলাচলও কম। বর্ষা শুরু হওয়ায় ইটভাটাগুলো বন্ধ আছে। এতে বায়ুদূষণ অনেক কমে গেছে।

>বায়ুমান সূচকে ঢাকার অবস্থান ৫৮তম
পোল্যান্ডের ওয়ারশ ৫৭তম এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার ৫৯তম স্থানে

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান বিভাগের পরিচালক জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার বায়ুদূষণের উৎসগুলো বন্ধ রয়েছে, এটা যেমন একদিক থেকে ঠিক, অন্যদিকে বর্ষা শুরু হওয়ায় আন্তসীমান্ত দূষিত বায়ু আসাও প্রায় বন্ধ। চীন ও ভারতের শিল্পকারখানা ও কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ধোঁয়া আসা বন্ধ আছে। ফলে দূষণ কমে গেছে।’

আর আবহাওয়াবিদেরা মনে করছেন, ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপর একটি বায়ুমণ্ডলীয় বাতাসের চাপ অবস্থান করে। এতে বাতাসের গতি কমে আসে। এতে দূষিত পদার্থগুলো সরতে পারে না। গত মে মাস থেকে ওই চাপ বলয়টি বাংলাদেশের ওপর থেকে সরে গেছে। ফলে বাতাসের প্রবাহ বেড়ে গেছে। এ কারণে দূষিত পদার্থগুলো এক জায়গায় স্থির থাকতে পারছে না। যে কারণে দূষণ কমেছে। এ ছাড়া অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবারের বর্ষায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি। ফলে বায়ুদূষণকারী সূক্ষ্ম বস্তুকণাগুলো বাতাসে ভেসে থাকতে পারছে না। এই সবকিছু মিলিয়ে ঢাকার বাতাসে দূষণ অনেক কমে গেছে।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় গবেষণা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, গত মে মাসের শুরু থেকেই ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি হতে থাকে। জুন পর্যন্ত বায়ুর মান ‘সন্তোষজনক’ পর্যায়ে চলে আসে। কেন্দ্রের পরিচালক কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘ঢাকার বায়ুর মানের উন্নতি দেখে মনে হচ্ছে ইটভাটা ও মেট্রোরেলের মতো বড় অবকাঠামোগুলো ঢাকার বায়ুর মানকে এত দিন খুবই খারাপ অবস্থায় রেখেছিল। আশা করি, ভবিষ্যতে এই দুটি উৎসকে কীভাবে পরিবেশবান্ধব করা যায় এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সরকার সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে।’