হাতিরঝিল ভরাট ও পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের বিরোধিতা করে বিবৃতি দিয়েছেন ১৫৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ বিষয়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তাঁরা আশা করেন, পান্থকুঞ্জ ও হাতিরঝিল বাঁচিয়ে মাত্র একটি সংযোগ সড়ক বাতিল করে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ গতিশীল করা হবে।
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব ও নাঈম উল হাসান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি শুরু থেকেই দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়হীনতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে, যা পরিবেশগত সংকট এবং জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন লঙ্ঘন করে এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাতিরঝিলের জলাধার ভরাটের মাধ্যমে এর শ্রেণি পরিবর্তন করা হয়েছে এবং পান্থকুঞ্জের প্রায় দুই হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। গত ডিসেম্বর থেকে একদল তরুণ বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের মাধ্যমে এই উদ্যান ও জলাধার রক্ষায় আন্দোলন করে যাচ্ছে। এতে সংহতি জানিয়েছেন বহু মানুষ এবং সংগঠন। অন্তর্বর্তী সরকারের তিনজন উপদেষ্টা পান্থকুঞ্জ পার্কে এসে অঙ্গীকার করেছিলেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসবেন। কিন্তু পাঁচ মাসেও সেই সভা না হওয়াতে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে বিবৃতিতে।
জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসা অন্তর্বর্তী সরকার পরিবেশ ও গণস্বার্থবিরোধী প্রকল্প বাতিল করে বাংলাদেশের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে বিশিষ্ট নাগরিকেরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা বিবৃতিতে বলেছেন, সংস্কারের অঙ্গীকার এই সরকারের ভিত্তি, তার বিরুদ্ধে যায়, এমন কোনো কাজ এই সরকার প্রশ্রয় দেবে না।
এই জলাধার ও উদ্যান রক্ষায় কিছু তরুণ ১৫১ দিন ধরে পার্কেই অবস্থান করে অহিংস পরিবেশবান্ধব লড়াই করে যাচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। শীত, গ্রীষ্ম, বৃষ্টি, ইঁদুর, মশা, শব্দ, কালো ধোঁয়া—সবকিছু সহ্য করে সাহসী তরুণ প্রজন্ম দেশের একটা সম্পদ জনগণের জন্য বাঁচাতে যে উদাহরণ তৈরি করেছে, অবিলম্বে রাষ্ট্র তাদের সেই অবদানের স্বীকৃতি দিয়ে পান্থকুঞ্জ ও হাতিরঝিল রক্ষার দাবি মেনে নেবে, এমনটাই আশা প্রকাশ করেন বিবৃতিদাতারা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন আনু মুহাম্মদ, ইফতেখারুজ্জামান, শিরীন পারভীন হক, গীতি আরা নাসরীন, শহিদুল আলম, সলিমুল্লাহ খান, সামিনা লুৎফা, মাহা মির্জা, রেহনুমা আহমেদ, ফিরোজ আহমেদ, আলতাফ পারভেজ, খুশী কবির, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, নাসির আলী মামুন, শায়ের গফুর, আবু সাঈদ এম আহমেদ, শামসী আরা জামান, সাইফুল হক, আদিল মুহম্মদ খান প্রমুখ।