পাভেল পার্থ, ব্রাজিল থেকে

স্মৃতির সিন্দুক নিয়েই কি নিখোঁজ হবে পৃথিবী

১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় থেকে ২০২৪–এর রিমাল পর্যন্ত কত বীজ, গান, চিত্রশৈলী, নকশা, প্রথা কিংবা লোকায়ত জ্ঞান হারিয়ে গেছে—তার হিসাব করা হয়নি।

জলবায়ু সম্মেলনস্থলের বাইরে বিক্ষোভ করেন ফরাসি জলবায়ুকর্মী কামিই এতিয়েনসহ (বাঁয়ে) অধিকারকর্মীরা। গত বুধবার ব্রাজিলের বেলেম শহরে
ছবি: এএফপি

বেলেমের গনগনে দুপুরে জলবায়ু সম্মেলনের আফ্রিকা প্যাভিলিয়নে হঠাৎ আগুন লাগে ২০ নভেম্বর। কর্তৃপক্ষ দ্রুত আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। ওই ঘটনার পর পিপলস প্লেনারি ব্লু জোনের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকে। বিদ্যুতের লাইনে অতিরিক্ত চাপ পড়ায় শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরেছে বলে জানানো হয়। ব্লু জোনের বাইরের জটলা থেকে বাসের ভেতরের আলাপের জমিন দখল করে আগুন। হয়তোবা এই আগুনের ক্ষতির হিসাবও হবে। তবে নিদারুণভাবেই বাদ পড়বে পুড়ে যাওয়া স্মৃতি, অনুষ্ঠিত হতে না পারা বেদনার্ত আলাপগুলোর প্রস্তুতি কিংবা বিশ্বনেতাদের সময়ক্ষেপণের প্রবল প্রতারণার হিসাব।

সব আপদ-বিপদ, দুর্যোগ বা জলবায়ু সংকটের ক্ষয়ক্ষতিকে সব সময় টাকার অংকে হিসাব করা হয়। কত ঘর পুড়ল, কত শতক জমি ডুবল, কত গাছ ভেঙে পড়ল ইত্যাদি। তবে সবসময় বাদ পড়ে অ-অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির (নন-ইকোনমিক লস অ্যান্ড ড্যামেজ) বিবরণ। ১৯৭০ সালের ভোলার সেই ঘূর্ণিঝড় থেকে ২০২৪ সালের রিমাল পর্যন্ত বাংলাদেশের গ্রাম কত বীজ, গান, রূপকথা, গল্প, বুনন, চিত্রশৈলী, নকশা, কৃত্য, প্রথা কিংবা লোকায়ত জ্ঞান হারিয়ে গেছে— তার হিসাব করা হয়নি। বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের (ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ) এবং প্রাণসম্পদের নির্দয় নিখোঁজের কোনো রাষ্ট্রীয় দলিলায়ন নাই। বৈশ্বিক জলবায়ুমঞ্চেও অ-অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি সামালের জন্য কোনো দেনদরবার বা অঙ্গীকার নাই। তবে কি এই পৃথিবী তার সন্তানদের অসীম স্মৃতির সিন্দুক নিয়ে সবার সামনেই নিখোঁজ হয়ে যাবে?

বেলেম জলবায়ু সম্মেলনের ‘বৈশ্বিক মুটিরাও’ (সম্মিলিত প্রচেষ্টা) ঘোষণায় জলবায়ুজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর বিষয়টি যুক্ত হলেও ‘অ-অর্থনৈতিক’ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদানে (এনডিসি) ‘অ-অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির’ বিষয়টি যুক্ত করেছে। সুন্দরবনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং বাস্তুচ্যুতির কারণে লোকায়ত জ্ঞানের ক্ষতিকে উদাহরণ হিসেবে টেনে অ-অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়নের জন্য একটি জাতীয় কাঠামো গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ। একইসাথে জলবায়ু-দুর্গত অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং প্রতিবেশগত জ্ঞান নিয়ে একটি ‘জনগোষ্ঠীভিত্তিক স্মৃতি ব্যাংক’ গড়ে তোলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এনডিসিতে।

রাষ্ট্রীয় কর্মকৌশল ও সামগ্রিক উন্নয়ন তৎপরতায় লোকায়ত জ্ঞানকে প্রবলভাবে অস্বীকার করে রাখার বাহাদুরি সামনে এই অঙ্গীকার পূরণ কতখানি দায়িত্বশীল হবে তা দেখার বিষয়।

মায়া, ইনকা, আজটেক কিংবা সভ্যতার ক্ষয়িঞ্চু জ্ঞানপ্রবাহ

পেরু, মেক্সিকো, গুয়াতেমালা, বেলিজ, ইকুয়েডর, বলিভিয়া, চিলি, হন্ডুরাস অঞ্চলে ইতিহাসের নানা কালপর্বে গড়ে ওঠেছিল পৃথিবীর তিন সভ্যতা। মায়া, ইনকা ও আজটেক। সেইসব নিখোঁজ সভ্যতার বংশধরদের লোকায়ত জ্ঞানপ্রবাহ আজ জলবায়ু সংকটের কারণেও আরেক ক্ষয়ের মুখোমুখি।

পেরুর উত্তরাঞ্চলের লাম্বায়েকু রিজিয়নের কন্দর পর্বতে আনহেলিনা পাহাড়ে বসবাস করেন কাচুয়া আদিবাসীরা। ইসাবেলা অগাস্টিনা কালডেরন কার্লোস জলবায়ু সম্মেলনে এসেছেন সেই পাহাড় থেকে। ১৩ নভেম্বর ট্যাক্সিতে ব্লু জোনে যেতে যেতে তিনি জানালেন, তারা তিন ধরনের হুলবিহীন বিরল মৌমাছি সংরক্ষণ করেন। মিলদেপালো, আলপারগাতে এবং করতাপালো।

প্রাচীন গাছ কেটে ফেলা, বৃষ্টিপাতের ধরণ বদলে যাওয়া ও উষ্ণতাবৃদ্ধির কারণে পরাগরেণু ঝরে পরায় মৌমাছির খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। মিলদেপালো মৌমাছিরা অতি বিরল হয়ে পড়ছে।

মিলদেপালোর মধু সবচেয়ে ভাল এবং এটি নারীদের জরায়ুসংক্রান্ত চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ইসাবেলা এসব তার মা রুফিয়ার কাছ থেকে শিখেছেন। তাঁর মা শিখেছেন নানি পাসওয়ালার কাছ থেকে। তিনি একজন বিখ্যাত ‘পারটেরা করানডেরা (জরায়ু কবিরাজ)’ ছিলেন। তাঁর মতো ‘মিয়েল মেডিসিনাল (মধু-ভেষজ)’ আর কেউ বানাতে জানে না। প্রাচীন এলগারবো এবং ফিকাস গাছের খোঁড়লে মৌমাছি বাসা বানায়। কিন্তু প্রাচীন গাছ কেটে ফেলা, বৃষ্টিপাতের ধরণ বদলে যাওয়া ও উষ্ণতাবৃদ্ধির কারণে পরাগরেণু ঝরে পরায় মৌমাছির খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। মিলদেপালো মৌমাছিরা অতি বিরল হয়ে পড়ছে। মিলদেপালো লালনপালনের লোকবিজ্ঞান ক্ষয়ে যাচ্ছে।

১৪ নভেম্বর ইনডিজেনাস প্যাভিলিয়নে আলাপ হয় পেরুর আমাজন বনের উকায়ালি নদী তীরের শিপিবু-কনিবু আদিবাসী জুডিটলা নুনিয়া ওরাউ’র সঙ্গে। ‘আয়াহুয়াস্কা’ নামে লোকায়ত ভেষজবিদ্যা আছে তাদের। বাংলাদেশে যেমন চাকমাদের আছে ‘তালিক শাস্ত্র’। বিখ্যাত আয়াহুয়াস্কা চিকিৎসক ওলিভিয়া আরেভালুর কথা জানালেন জুডিটলা।

মনে পড়ে, বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলে বাতব্যথা সারাতে কলতামারা গান ও সাপেকাটা চিকিৎসার জন্য হারিয়ে হারানো ভাসান গানের কথা।

তেল উত্তোলন, বন ধ্বংস এবং অবৈধ মাদক ব্যবসার কারণে আমাজন থেকে বহু ঔষধি গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসার সময় যে গানগুলি গাওয়া হয় তা ভুলে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। মনে পড়ে বাংলাদেশের হাওরাঞ্চলে বাতব্যথা সারাতে কলতামারা গান ও সাপেকাটা চিকিৎসার জন্য হারিয়ে হারানো ভাসান গানের কথা।

পেরুর প্রেইনকা আধ্যাত্মিক আদিবাসী নেতা ওয়ানকা ইনতির দীর্ঘ প্রকৃতি-ভাবনায় বিমুগ্ধ হয়ে যাই ব্লুজোনের এক সংলাপে। ১৯ নভেম্বরের সেই আলাপে তিনি বলেন, তাঁরা সূর্যের সন্তান। প্রকৃতিকে বুঝতে হলে জখম নয়, স্পর্শ করতে হয়। এটা একটা দার্শনিক পরম্পরা, প্রতিদিনের অনুশীলন। বিশ্বনেতৃত্ব ও বৃহৎ দূষণকারীরা কবে প্রকৃতিকে স্পর্শ করবার দুঃসাহস করবে?

পাভেল পার্থ

প্রকৃতির সঙ্গে সংস্কৃতির রক্তের বন্ধন

ব্রাজিলের আমাজন বনের তেনেতিয়ারা আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর শতবর্ষী প্রবীণ হেনন তেম্বের সঙ্গে ১৫ নভেম্বর আলাপ হয় ব্লু–জোন থেকে বহু দূরে এলডেইয়াতে। নিজেদের ঐতিহ্যগত উইরাপ্পারা (ধনুক) এবং ঔউনি (তির) দেখিয়ে তিনি বললেন, সঠিকভাবে তির-ধনুক বানানোর বিদ্যা ক্রমশই ভুলে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম।

১৬ নভেম্বর বেলেমের জুওবোটানিক্যাল উদ্যানে দেখা হয় ব্রাজিলের কানেলা আদিবাসী ওসকা কানেলার সঙ্গে। ‘উদ্যানে একধরনের তালপাতা দেখিয়ে বলেন, এই গাছগুলো কমে যাচ্ছে, আগের মতো পাতা বড় হয় না, এই পাতা দিয়ে আমরা ঘর বানাই’, জানালেন কানেলা। ‘ইখরি লুউউ’ নামের প্রাচীন লম্বাটে ঘর বানানোর চল ওঠে যাচ্ছে। কানেলারা বিশ্বাস করেন গাছপালা-পশুপাখি-প্রকৃতির সঙ্গে তাদের সংস্কৃতির রক্তের বন্ধন আছে।

বেলেমে কপ-ভিলেজ ও উদ্যানে কয়েকজন কায়াপো আদিবাসী নারীদের বাইরে থেকে আসা তরুণ ছেলে-মেয়েদের শরীরে ‘মে’ওক (ঐতিহ্যবাহী শরীরচিত্র)’ করে দিতে দেখা গেল। ১৬ নভেম্বর উদ্যানে বেকওয়েনহুমটি কায়াপোর সঙ্গে কথা হয়। জেনিপপ গাছের ফলের কালচে রস দিয়ে এই শরীরচিত্র আঁকা হয়। কিন্তু উদ্যানে কোথাও এই গাছ খুঁজে পাওয়া গেল না।

মাছ হারালে ভাষাও হারায়

পানামার গুনা আদিবাসী ওনেল মাসারডুলে এরিসের সাথে তুরস্ক প্যাভিলিয়নের সামনে বসে আলাপ করেছিলাম। সমুদ্র এবং পাহাড় নিয়ে গুনাদের বসবাস। কলা, নারকেল আর সামুদ্রিক মাছের ওপরই জীবন তাঁদের। লবণাক্ততা ও উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে মাছের ঝাঁক জায়গা বদল করে ফেলে প্রতিনিয়ত। বিশেষ করে কজিনুয়া এবং কেলু মাছ এখন কম দেখা যায়।

ক্ল্যামাথ নদীতে বানানো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দূষণের কারণে ২০০৩ সালে ৬০ হাজার স্যামন মাছ মারা যায়।
ব্রুক এম থম্পসন, ইউরুক-কারুক আদিবাসী প্রতিনিধি

উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়ে খনন এবং শিল্পদূষণের কারণে বাংলাদেশের সারি-গোয়াইন নদী থেকেও হারিয়ে গেছে লোচ নামের এক বিরল মাছ। এর আগে বাংলাদেশের হাওর হারিয়েছে নানিদ মাছ। কুমিরের খিল, রানী, গুতুম, পিপড়াশইল, বাঘাইর মাছগুলি বিপন্ন। জাতীয় মাছ ইলিশের প্রজনন ও বিচরণ বাধাগ্রস্ত করছে উষ্ণতাবৃদ্ধি ও নদীর আটকানো প্রবাহ।

আমেরিকার নদীকর্মী ও প্রকৌশলী ইউরুক-কারুক আদিবাসী প্রতিনিধি ড. ব্রুক এম থম্পসন ১৭ নভেম্বর নদীবিষয়ক এক আলোচনায় জানান, ক্ল্যামাথ নদীতে বানানো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দূষণের কারণে ২০০৩ সালে ৬০ হাজার স্যামন মাছ মারা যায়। স্যামনের ওপর নির্ভরশীল তাদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। উপস্থাপনার মাঝে তার চোখ ভিজে যায়, উপস্থিত অনেকেই জল ধরে রাখতে পারেনি। বেলেম সম্মেলনের কাছে এই চোখের পানি কোনো প্রমাণ হাজির করে কিনা জানি না।

একটি মাছ বা পাখি বা ধান হারালে কোনো গ্রাম থেকে, কোনো সমাজ বা জাতিগোষ্ঠীর ভাষা থেকে সেই শব্দটিও হারিয়ে যায়। আগের শব্দ ভিন্ন মানে ও রূপকল্প নিয়ে হাজির হয়।

পবিত্রস্থল, সমাধি, খেলার মাঠ  কিংবা হারানো কৃত্য

 চিলির মাপুচি আদিবাসী নেতা নেস্টার ক্যানপিওর সঙ্গে কথা বলতে নদীকর্মী কনরাড সহযোগিতা করলেন। মাপুচি থেকে স্প্যানিশ হয়ে ইংরেজি এবং তারপর বাংলা করাতে হয়তো বহু উচ্চারণ ও ভাষিক ভুল হতে পারে। ১৭ নভেম্বরের সেই আলাপে নেস্টার জানান, হুয়েনচেকো, ট্রিফ ট্রিফ, চাউ উইম, হুংকিজু ঔষধি গাছগুলি এখন আর বনে খুঁজে পাওয়া যায় না। বিওবিও নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে ‘উইসাওয়ে’ এবং ‘তু ফুল টুফু’ নামের পবিত্রস্থলগুলি তাঁরা হারিয়েছেন। বাংলাদেশেও অধিপতি উন্নয়নে মান্দিদের মিদ্দিআসং, সাঁওতালদের জাহেরথান, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে বহু মৌজা রিজার্ভ বন নিশ্চিহ্ন হয়েছে।

বাংলাদেশের লালেং বা পাত্র আদিবাসীরা বনের কাছিম হারিয়ে যাওয়ায় নাফাং লারাম ও অকুং লারাম পূজা করতে পারেন না।

বলিভিয়ার উচুপিয়ামুনা আদিবাসী প্রতিনিধি রুথ আলিপাজ কুইয়ি ১৭ নভেম্বর এক আলাপে বালাচিপাতে বাঁধের কারণে আমাজনের বেনি নদীর মৃত্যু ও শৈশবের খেলার মাঠগুলি বাঁধের অতলে হারিয়ে যাওয়ার কাহিনি শোনান।

মেক্সিকোর ওটমি তলটেক আদিবাসী পরিবেশকর্মী মিন্দাহি ক্রেসেনসিও বাস্টিডা মুনেজও সম্মেলনস্থলের গ্রীন জোনের সড়কে যেতে যেতে তাদের হারিয়ে যাওয়া ভূমির গল্প শোনান এক বিকেলে। বললেন, সেইসব ভূমির সঙ্গে তাদের আধ্যাত্মিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে।

বেনিনের টলিনু আদিবাসীদের ‘ভদউওন’ ধর্মের একজন ‘আহানাবি (ধর্মীয় নেতা)’ ওকিউস্যু লিও ১৭ নভেম্বর আদিবাসী প্যাভিলিয়নে বলেন, জলবায়ু সংকটের কারণে বহু কৃত্য, উৎসব এবং অনুষ্ঠান আয়োজন করা সম্ভব হয় না। বাংলাদেশের লালেং বা পাত্র আদিবাসীরা বনের কাছিম হারিয়ে যাওয়ায় নাফাং লারাম ও অকুং লারাম পূজা করতে পারেন না।

লোকায়ত জ্ঞান ও স্থানীয় প্রাণসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রশ্নে অবশ্যই সতর্ক ও দায়িত্বশীল থাকা জরুরি। কারণ বিশ্বব্যাপী গবেষণা, উন্নয়ন ও বায়োপ্রসপেক্টিংয়ের (জৈব সম্পদ অনুসন্ধান) নামে লোকায়ত জ্ঞান ও প্রাণসম্পদের বায়োপাইরেসির (জৈবসম্পদের অনৈতিক দখল) ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে উন্মুক্ত, অবাধ ও পূর্বানুমতির নীতি মানতে হবে। অ-অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের জন্য রাষ্ট্রগুলোর দক্ষতা বাড়াতে জাতিসংঘে ‘সান্টিয়াগো নেটওয়ার্ক’ তৈরি হয়। বিশ্বব্যাপি বিরল, বিবর্ণ, বিক্ষত ও বিধ্বস্ত আবার একইসাথে ছিনতাই হতে থাকা অ-অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সান্টিয়াগো নেটওয়ার্ক সেই দক্ষতা কী তৈরি করতে পারছে? বেলেম সম্মেলনমঞ্চ কেন এই প্রশ্ন করছে না?

পাভেল পার্থ: লেখক ও গবেষক।

animistbangla@gmail.com