ইউক্যালিপটাস গাছ
ইউক্যালিপটাস গাছ

ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণিগাছ নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন

সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণিগাছের চারা তৈরি ও রোপণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করেছে সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বন-১ অধিশাখা থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের স্বার্থে ও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গিকার পূরণে এ দুটি প্রজাতির গাছের চারা তৈরি, রোপণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বন-১ অধিশাখার উপসচিব তুষার কুমার পাল বলেন, নানা গবেষণায় দেখা গেছে এসব গাছের পানি শোষণক্ষমতা বেশি ও মাটিকে রুক্ষ করে তোলে। তাই দেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগ্রাসী প্রজাতির গাছের চারা রোপণের পরিবর্তে দেশি প্রজাতির ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করে বনায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে তুষার কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে এ দুটি প্রজাতির গাছের চারা রোপণ, বীজ থেকে এসব প্রজাতির চারা তৈরি করা ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের ইনস্টিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক কামাল হোসেন ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণিগাছ নিয়ে গবেষণা করেছেন দীর্ঘদিন। বইও লিখেছেন ‘ইউক্যালিপটাস ডিলেমা ইন বাংলাদেশ’ নামে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দেশি প্রজাতিকে প্রাধান্য দিয়ে বনায়নের নির্দেশনা একটা ভালো উদ্যোগ।

কামাল হোসেন বলেন, ১৯২১ সালে সিলেটের চা–বাগানে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য প্রথম ইউক্যালিপটাস নিয়ে আসা হয় অস্ট্রেলিয়া থেকে। ১৯৬০ সালের দিকে কিছু আসে। বড় আকারে আসে ১৯৭৭-১৯৭৮ সালের দিকে। এ সময় আকাশমণিও আনা হয় দেশে। তখন বিএফআরই (বাংলাদেশ ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট) পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, হাটহাজারী, মধুপুর, দিনাজপুরের বিভিন্ন জায়গায় এটির উপযোগিতা পরীক্ষা করে। এরপর বাংলাদেশে এটার বিস্তার ঘটে।

এই শিক্ষক বলেন,ইউক্যালিপটাস পানি বেশি শোষণ করে; কারণ, এটার গ্রোথ বেশি। এটি যেখানে লাগানো হয়, সেখানে এটি প্রচুর বীজ ছড়ায়। ফলে, অন্যান্য প্রজাতির গাছ জন্ম নেওয়ার সুযোগ পায় না।

তবে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি এ দুটি প্রজাতির অবক্ষয়িত ও অনুর্বর মাটিতে টিকে থাকার ক্ষমতা বেশ ভালো উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, এসব জায়গায় এটি লাগানো যায় কি না, সেটা নিয়ে সরকার ভাবতে পারে।