Thank you for trying Sticky AMP!!

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির হন

মানি লন্ডারিং মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আমলে নিলেন আদালত

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন আদালত।

ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আজ মঙ্গলবার এ অভিযোগপত্র আমলে নেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন।

আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত-৪-এ বদলি করা হয়েছে। আগামী ২ মে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য তারিখ ঠিক করেছেন আদালত।

এর আগে ড. ইউনূস আজ দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে আদালতে হাজির হন।

এই মামলায় গত ৩ মার্চ আদালত থেকে জামিন পান ড. ইউনূস।

Also Read: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র অনুমোদন দিল দুদক

গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা এই মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।

ড. ইউনূস ছাড়া অভিযোগপত্রে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের দপ্তর সম্পাদক মো. কামরুল হাসানকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে কামরুল হাসানের নাম তদন্তের পর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বাকি ব্যক্তিদের নাম এজাহারে ছিল।

Also Read: কার জন্য ঘণ্টা বাজছে...

দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ মে মামলাটি করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ।

দুদক বলছে, গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. ইউনূস ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলামসহ গ্রামীণ টেলিকমের বোর্ড সদস্যদের উপস্থিতিতে ২০২২ সালের ৯ মে সিদ্ধান্ত হয় ব্যাংক হিসাব খোলার। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৮ মে একটি ব্যাংক হিসাব খোলা হয় বলে জানানো হয়।

দুদক বলছে, গ্রামীণ টেলিকমের কর্মচারীদের পাওনার লভ্যাংশ বিতরণের জন্য শ্রমিক ইউনিয়ন এবং গ্রামীণ টেলিকমের সঙ্গে একই বছরের ২৭ এপ্রিল একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ওই চুক্তিতে ৮ মে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে বলে দেখানো হয়, যা বাস্তবে অসম্ভব। কাগজপত্র নকল করে এটা করা হয়।

দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী এবং ১০৮তম বোর্ড সভার (গ্রামীণ টেলিকম) সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০২২ সালের ১০ মে গ্রামীণ টেলিকমের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মিরপুর শাখা থেকে ঢাকা ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৪৩৭ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার ৬২১ টাকা স্থানান্তর করা হয়। কর্মচারীদের লভ্যাংশের টাকা বিতরণ না করে তাঁদের না জানিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়।

অবশ্য ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কর্মীরা লভ্যাংশের ভাগ বাবদ পাওনা চেয়ে আদালতে গেলে তাঁদের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের সমঝোতা হয়। সেই সমঝোতার ভিত্তিতে আইনজীবীদের খরচ বাবদ কর্মীরা ওই ২৫ কোটি টাকা অগ্রিম চেয়েছিলেন। সেটিই দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কর্মীদের লিখিত সম্মতি আছে।

আবদুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, কর্মীরা ব্যাংক হিসাব খুলতে দেরি করায় চুক্তিতে সেই জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছিল। পরে দুই পক্ষ সেখানে ব্যাংক হিসাব নম্বর বসায়। সেটি সম্মতির ভিত্তিতে হয়েছে।

Also Read: ড. ইউনূসের ৬ মাসের কারাদণ্ড

লভ্যাংশের ভাগ বাবদ পাওনা টাকা চেয়ে গ্রামীণ টেলিকমের ১৭৬ কর্মী শতাধিক মামলা করেছিলেন। তাঁরা হাইকোর্টেও গিয়েছিলেন। পরে তাঁদের সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের সমঝোতা হয়। ড. ইউনূসের আইনজীবীরা বলছেন, সমঝোতার মাধ্যমে পাওনা পেয়ে গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীরা ২০২২ সালে মে মাসে মামলাগুলো প্রত্যাহার করেন। পরে পাওনা পরিশোধের বিষয়টিকেই অর্থ আত্মসাৎ ধরে দুদক মামলা করে।

ড. ইউনূসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকারের নির্দেশে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর দুদকে চিঠি দেয়। যেটা তারা পারে না। আর ড. ইউনূস যখন এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন, তখন তড়িঘড়ি করে দুদক তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে। এর মাধ্যমে ড. ইউনূসকে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে।

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের দায়ের করা এক মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনকে গত ১ জানুয়ারি ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেন শ্রম আদালত। এই সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে ড. ইউনূসসহ চারজনের করা আপিল গত ২৮ জানুয়ারি শুনানির জন্য গ্রহণ করেন শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল। তাঁরা জামিনে আছেন।

Also Read: ড. ইউনূসসহ চারজনের সাজার রায় স্থগিতের আদেশ বাতিল