সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট

শোকজ নয়, তিন বিচারপতির কাছে শুধু কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে: সুপ্রিম কোর্ট

হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতিকে ‘শোকজ’ করা নিয়ে দিনভর আলোচনার পর আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। জানাল, এ খবর ভিত্তিহীন। ওই তিন বিচারপতির কাছে শুধু মামলা–সংক্রান্ত কিছু তথ্য চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

বিপুলসংখ্যক জামিন দেওয়ায় তিন বিচারপতির কাছে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ব্যাখ্যা চেয়েছেন বলে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তা নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আলোচনা শুরু হয়। দু-একটি সংবাদমাধ্যম এ খবরও দেয় যে তিন বিচারপতিকে শোকজ করা হয়েছে।

এরপর সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। তাতে বলা হয়, কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিপুলসংখ্যক জামিন প্রদান করায় হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতিকে শোকজ করে তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এবং ফোন করে তিনজন বিচারপতি, যথা বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি জাকির হোসেনকে ওই নোটিশ সম্পর্কে অবহিত করেছেন।

‘বাস্তবে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ উল্লেখিত তিনজন বিচারপতিকে কোনো শোকজ বা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেননি। বরং প্রশাসনিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কেবল মামলা–সংক্রান্ত কিছু তথ্য চেয়েছেন, যা আদালত ব্যবস্থাপনার অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়ার একটি নিয়মিত দাপ্তরিক বিষয়,’ বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

তথ্য চাওয়ার বিষয়টি আদালতের বিশেষ একটি যোগাযোগব্যবস্থা উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলামের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়, নানা সংবাদে ব্যবহৃত তথ্যে মূল বিষয়টি বিকৃত ও ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে তা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা হচ্ছে, প্রতিটি গণমাধ্যম আদালত–সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পূর্বে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ প্রচার করবে, যাতে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন থাকে এবং জনগণ বিভ্রান্ত না হয়।

এর আগে ২৩ অক্টোবর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সেদিন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উচ্চ আদালতের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা ওঠার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যেমন ধরেন, আপনারা জানেন সাম্প্রতিক কালে আপনারা কেউ এটা ইনভেস্টিগেট (অনুসন্ধান) করেননি। আপনাদের অনুরোধ করব, ইনভেস্টিগেট করেন যে একটা উচ্চ আদালতের একটা বেঞ্চ এক দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টায় প্রায় ৮০০ মামলায় জামিন দিয়েছেন। জামিন তিনি দিতেই পারেন। কিন্তু চার থেকে পাঁচ ঘণ্টায় ৮০০ মামলা কি শোনা সম্ভব?’