
ওয়াসার পানিতে ‘দূষণের’ অভিযোগ অবিলম্বে অনুসন্ধানের পাশাপাশি আক্রান্ত এলাকায় পরিষ্কার পানির সরবরাহ নিশ্চিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
‘ওয়াসার পানিতে পোকা, বাসিন্দাদের ভোগান্তি’ শিরোনামে প্রথম আলোর অনলাইনে গত ১২ এপ্রিল একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে আরেকটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদন যুক্ত করে বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পানি সরবরাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর গত মাসে রিটটি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম ও মাহফুজ বিন ইউসুফ।
পরে আইনজীবী মো. সালেকুজ্জামান সাগর প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার আক্রান্ত সব এলাকায় অবিলম্বে পরিষ্কার ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওই পানিদূষণ কেন হয়েছিল এবং এতে ব্যর্থতা ছিল কি না, তা অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রথম আলোয় গত ১২ এপ্রিল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গোসল করতে গেলেন, শাওয়ার ছাড়লেন। পানির সঙ্গে যদি পোকা এসে গায়ে পড়ে কেমন লাগবে? এটাই আমার সঙ্গে হয়েছে। এত নোংরা পানি, সঙ্গে কী সব কালো ছোট্ট পোকা, দেখলেই গা গুলিয়ে আসে। এভাবে কি পানি ব্যবহার করা সম্ভব!’ কথাগুলো রাজধানীর কল্যাণপুরের নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা কাকলী খানের। ফেসবুকে ‘কল্যাণপুর’ নামের একটি গ্রুপে পানি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ কথাগুলো লেখেন তিনি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পানিতে পোকার সমস্যা জানিয়ে কল্যাণপুরের বাসিন্দাদের ওই ফেসবুক গ্রুপে প্রতিদিনই লেখালেখি হচ্ছে। শুধু কল্যাণপুর নয়, রাজধানীর বেশ কিছু এলাকায় ওয়াসার পানিতে পোকা বা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা পানির সমস্যার অভিযোগ উঠেছে। পোকা পাওয়া যাচ্ছে শুধু ঢাকা ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে। পোকার রং কোথাও লালচে, কোথাও কালো।
গণমাধ্যমে আসা পোকাসহ ঢাকা ওয়াসার দূষিত পানি সরবরাহ এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। পানিদূষণ ইস্যু নিষ্পত্তির জন্য অনুসন্ধানে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে এবং ঢাকায় আক্রান্ত সব এলাকায় পরিষ্কার পানি সরবরাহ নিশ্চিতের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। স্থানীয় সরকার সচিব, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ওয়াসা সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।