
এক দশকের বেশি সময় আগে রাজধানীর মিরপুরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক এক নেতার বাসায় ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার উপপরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. মাহামুদন্নবী। তিনি বলেন, গত ২৬ অক্টোবর এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না মেলায় পুলিশের মিরপুর বিভাগের সাবেক উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইমতিয়াজ আহমেদসহ ৫ জনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। বাকিরা হলেন মনীষা দেওয়ান, মো. মোজাম্মেল, সৈয়দ মাসুদ রানা, দীন ইসলাম পাপ্পু, শাহানা ইসলাম শান্তনা।
ভুক্তভোগী মোহাম্মদ শামীম পারভেজ ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক। তিনি ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার ছিলেন।
অভিযোগপত্রে থাকা অন্য আসামিরা হলেন মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক কাউন্সিলর দেওয়ান আব্দুল মান্নান, ১১ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সদস্য মীর জসিম উদ্দিন, ১১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সদস্য তৌহিদুল ইসলাম খান, একই ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম কিবরিয়া পিয়াস, সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. মামুন মিয়া, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মনসুর আলী, ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল হক, ১১ নম্বর ওয়ার্ড তাঁতী লীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ, ১১ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জিয়াউল হাসান জিয়া, ১১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মিরপুর থানা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়ানুহা চৌধুরী।
অভিযোগপত্রে নাম থাকা অন্য আসামিরা হলেন বিপুল পাটোয়ারী, মিজানুর রহমান আখন, মো. শহিদুল ইসলাম রজব, এম আয়নাল আহামেদ, মো. সাঈদ ইকবাল ভাস্কর, মো. সামসুল হক, মো. ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রধান, আনোয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম ও জালাল দেওয়ান।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ ও তাঁর সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা লাঠি ও হকিস্টিক নিয়ে শোডাউন দিয়ে শামীম পারভেজের বাসার সামনে আসেন। তাঁরা বাসার দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। হামলাকারীরা ফ্ল্যাটের ভেতরে ভাঙচুর করে দুই লাখ টাকার ক্ষতি করেন। তাঁরা ৯ লাখ টাকা ও ২০ ভরি স্বর্ণ লুট করেন।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, হামলার সময় তাঁরা চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘(মুদ্রণযোগ্য নয় এমন গালি) শামীম এখনো সময় আছে, বাঁচতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় রাজি হ, না হলে তুই বাঁচতে পারবি না। কত দিন পালিয়ে বাঁচবি? তোকে যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানে মেরে ফেলা হবে।’ এ কথার দ্বারা হামলাকারীরা শামীমকে রাজনীতি ছাড়তে হুমকি দিয়েছেন।
হামলার ঘটনায় শামীমের স্ত্রী জান্নাত আরা ফেরদৌস গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর মিরপুর থানায় শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় আরও ১৪–১৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।