Thank you for trying Sticky AMP!!

র‍্যাবের মহাপরিচালক এম. খুরশীদ হোসেন সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। মিরপুর, ঢাকা, ৬ জানুয়ারি

গোয়েন্দা তথ্য ছিল, তবে কোথায় নাশকতা হবে, তা নিশ্চিত ছিল না: র‍্যাব

র‍্যাবের মহাপরিচালক এম. খুরশীদ হোসেন বলেছেন, রাজধানীতে নাশকতা ঘটতে পারে—র‍্যাবের কাছে এমন গোয়েন্দা তথ্য ছিল। কিন্তু কোথায় নাশকতা ঘটবে, তা নিশ্চিত করে জানা ছিল না।

গোপীবাগে ট্রেনে অগ্নিসংযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে র‍্যাবের মহাপরিচালক খুরশীদ হোসেন এ কথা বলেন। সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুর কলেজে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন র‍্যাবের মহাপরিচালক। পরে সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা বিষয়ে জানাতে কলেজ মাঠে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, গতকাল ট্রেনে বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার থেকে বিএনপির ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে আপনি মনে করেন যে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন?
জবাবে র‍্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল যে এ ধরনের নাশকতা হতে পারে। কিন্তু কোথায় নাশকতা ঘটানো হবে, তা নিশ্চিত করে জানা কঠিন ছিল। নাশকতার জন্য বিএনপি-জামায়াত ভোট বর্জন করলেও মানুষ নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। গতকাল রাতে ট্রেনে কারা আগুন লাগিয়েছে, সে বিষয়ে এখনই মন্তব্য করা যাবে না। এ বিষয়ে তদন্ত ও অনুসন্ধান চলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল (শুক্রবার) তিনজনকে আটক করেছি। তাদের কাছে পেট্রোল বোমা পাওয়া গেছে ২৮টি, ককটেল পাওয়া গেছে ৩০টি। তাদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’

র‍্যাবের মহাপরিচালক বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয় করে র‍্যাব পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য র‍্যাব প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে সারা দেশে র‍্যাবের সব ইউনিট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে টহল শুরু করেছে, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। গুজব প্রতিরোধে সাইবার জগতে নজর রাখছে র‍্যাব। র‍্যাবের সুইপিং দল, ডগ স্কোয়াড, বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট কাজ করছে। বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য র‍্যাবের হেলিকপ্টার প্রস্তুত রয়েছে। টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রস্তুত রয়েছে।
র‍্যাবের মহাপরিচালক বলেন, র‍্যাব বিশেষ ধরনের নতুন ডিভাইস চালু করেছে। নির্বাচনের দিন এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় গেলে ওই যন্ত্র তাঁকে শনাক্ত করবে।

র‍্যাব তৎপর থাকবে, যাতে এক এলাকার মানুষ এলাকায় ভোট দিতে বা নাশকতা ঘটাতে না পারে। যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়া এক এলাকার মানুষ অন্য এলাকায় যেতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন নেওয়া ব্যক্তিরাই শুধু মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ কিছু দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার রয়েছে ভোট দেওয়া কিংবা না দেওয়া। কিন্তু তাঁরা যদি ভোট দিতে বাধা বা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন, সেটা হবে সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিক। যাঁরা এই বেআইনি কাজ করবেন, তাঁদের কঠোর হস্তে দমন করবে র‍্যাব।

র‍্যাবের মহাপরিচালক বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে গত নির্বাচনের পর ক্যাপিটল বিল্ডিং হামলা হয়েছে, ভারতেও নির্বাচনের সময় বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সহিংসতা হয়, লোক মারাও যায়।    

২০১৪ ও ২০১৮ সালের তুলনায় এবার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভালো বলে উল্লেখ করেন র‍্যাবের মহাপরিচালক। তিনি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

র‍্যাবপ্রধান খুরশীদ হোসেন বলেন, র‍্যাব নির্বাচনে তিনটি পর্যায়ে (ফেজ) দায়িত্ব পালন করছে। নির্বাচন–পূর্ববর্তী পর্যায় আজ শেষ হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামীকাল ভোটকেন্দ্র ও কেন্দ্রসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; নিরাপদে ভোট দিয়ে মানুষ যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা। তৃতীয় পর্যায় হলো নির্বাচন–পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। অনেক সময় বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, সহিংসতা হয়। এসব বিষয় মাথায় রেখে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে র‍্যাব।