উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা

আদালতে বাংলায় রায়-আদেশ দেওয়ার চর্চা বাড়ছে

নব্বইয়ের দশকে উচ্চ আদালতে প্রথম বাংলায় আদেশ দেওয়া শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিচারপতিরা বাংলায় রায়–আদেশ দেন, যা আগের চেয়ে এখন বাড়ছে।

দেশের নিম্ন আদালতে কিছু কিছু ক্ষেত্র ছাড়া শুনানিসহ বেশির ভাগ মামলায় রায় ও আদেশ বাংলায় দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনজীবীদের এখন বাংলায় শুনানি করতে দেখা যায়। আদালতের জিজ্ঞাসায়ও দেখা যায় বাংলার ব্যবহার। ইংরেজির পাশাপাশি উচ্চ আদালতে এখন বাংলায় রায়-আদেশের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ এক দশক আগেও বাংলায় রায় ও আদেশের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। তবে এ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে বাংলায় কতটি আদেশ ও রায় হয়েছে, তার কোনো সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য জানা যায়নি।

বর্তমানে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা ৮। হাইকোর্ট বিভাগে আছেন ৯১ বিচারপতি। বিচারালয়ের একাধিক অংশীজনের তথ্যমতে, চলতি ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দেওয়া শুরু করেন, যা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম। আর হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারপতি নিয়মিত বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট বিভাগের ১০ থেকে ১৫ বিচারপতি বাংলায় রায়-আদেশ দিয়েছেন। তবে উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষার ব্যবহার আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে বলে মনে করেন অংশীজনেরা।

‘উচ্চ আদালতে বাংলার ভাষার ব্যবহার, প্রয়োজনীয়তা ও সীমাবদ্ধতা’ শীর্ষক বইয়ে এক নিবন্ধে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি প্রয়াত মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান উল্লেখ করেছেন, ন্যায়বিচার যদি সদগুণ হয় এবং জনগণের কল্যাণের জন্যই যদি এর কাজ হয়, তবে তা জনগণের ভাষাতেই হওয়া উচিত।

আশার বিষয়, বাংলায় রায়–আদেশ লেখার চর্চা বৃদ্ধির পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত সব রায় ও আদেশ বাংলায় দেখতে গতকাল সোমবার থেকে নতুন প্রযুক্তিসেবা যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে গুগল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবী বা যেকোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায়-আদেশ বাংলায় অনুবাদ করে দেখতে পারবেন। এর আগে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের ‘বাংলা সংস্করণ’ চালু করা হয়।

অবশ্য সাধারণ মানুষ ও বিচারপ্রার্থীরা যাতে রায় বুঝতে পারেন, সে জন্য ইংরেজিতে দেওয়া রায় বাংলায় অনুবাদ করতে ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি সফটওয়্যার যুক্ত হয়। ‘আমার ভাষা’ নামের এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আদালতের রায় বাংলায় অনুবাদ করা যায়।

জানা গেছে, সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইংরেজি রায়ের ৭০ শতাংশ সঠিক অনুবাদ হয়। বাকিটা নিজেদের ঠিক করে নিতে হয়। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপিল বিভাগের ৭টি ও হাইকোর্ট বিভাগের ২২টি রায় অনুবাদ করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

ভাষার মাসে নতুন শুরু

এবার ভাষার মাসের প্রথম দিন থেকে বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। ১ ফেব্রুয়ারি তিনি আদালতে বলেছিলেন, এখন থেকে বাংলা ভাষায় আদেশ দেওয়া হবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, চেম্বার আদালত সপ্তাহে তিন দিন বসেন। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট কার্যদিবসে ৯৬০টি মামলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত বাংলায় দিয়েছেন তিনি। সাধারণত চেম্বার আদালতের আদেশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েকটি বাক্যে ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েকটি শব্দে হয়ে থাকে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

অর্পিত সম্পত্তিসংক্রান্ত এক মামলায় ১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলায় রায় দেন। একই দিন একটি ফৌজদারি রিভিশন মামলায় বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বাংলায় রায় দেন। এ ছাড়া রাজশাহীর বাগমারার বাইগাছা এলাকায় কীটনাশক প্রয়োগে ৫০টি তালগাছ মারা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিবেচনায় নিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুল ও নির্দেশসহ বাংলায় আদেশ দেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘উচ্চ আদালতে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মামলার শুনানি বাংলায় হচ্ছে, যা খুবই ইতিবাচক। আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ ইতিপূর্বে বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়েছেন। উচ্চ আদালতে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মামলার শুনানি এখন বাংলায় হচ্ছে, যা খুবই ইতিবাচক।

বাংলায় রায় ও আদেশের পূর্বাপর

সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রয়াত বিচারপতি এ আর এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী নব্বইয়ের দশকের শুরুতে হাইকোর্টে বাংলায় আদেশ দেওয়া শুরু করেন। এরপর সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে কাজী এবাদুল হক, হামিদুল হক, আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েকটি রায় বাংলায় দেন। বিচারপতি খায়রুল হক সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল, স্বাধীনতার ঘোষণা, স্বাধীনতাযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ, চার নদী সংরক্ষণসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় বাংলায় দেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগে) রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালে বাংলায় রায় লিখেছেন। এক যুগের বেশি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি থাকাকালে এই বিচারপতি বাংলায় প্রায় ৩০ হাজার রায় ও আদেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান (বর্তমানে আপিল বিভাগে) ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৬ সালের ১৫ জুন বাংলা রায় দেন।

দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) হত্যা মামলা। এ মামলায় হাইকোর্টের তিন বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ রায় প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠা। এতে বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী (বর্তমানে আপিল বিভাগে) বাংলায় ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন। ২০১০ সালে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরের বছর থেকেই তিনি ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রায়–আদেশ দেন। হাইকোর্ট বিভাগে এক যুগ দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ৭–৮ হাজার রায়–আদেশ বাংলায় (চলতি ভাষা) দেন বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের (বর্তমানে আপিল বিভাগে) নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলায় রায় ও আদেশ দেওয়া শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়টি বাংলায় লিখেছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।

২০১০ সালের এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ পান বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন। তখন থেকে নিয়মিত বাংলায় রায়–আদেশ দিচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মামলায় ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতি রায় দেন। এঁদের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল বাংলায় রায় লেখেন। এরপর থেকে তিনি বাংলায় রায় ও আদেশ দিচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্ট বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারপতি বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রয়াত বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান, বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম, বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান, বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী, বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান, বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেন রয়েছেন।

জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন গত শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ১০ বছর আগেও বাংলায় রায়–আদেশ ছিল হাতে গোনা। এখন আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে ৭০ শতাংশ মামলায় আইনজীবীদের বাংলায় যুক্তি উপস্থাপন করতে দেখা যায়। উচ্চ আদালতের কার্যক্রমে বাংলা ভাষার প্রচলন আরও বাড়বে।

সংবিধান ও আইনে যা আছে

সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদ বলছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। এই বিধান পূর্ণভাবে কার্যকরে ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ বাংলা ভাষা প্রচলন আইন করা হয়। বাংলা ভাষা প্রচলন আইনের (১) ধারা বলছে, ‘এই আইন প্রবর্তনের পর দেশের সর্বত্র, তথা সরকারি অফিস-আদালত, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া অন্যান্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্যান্য আইনানুগ কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে।’ আইনটি পাসের পর থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দাপ্তরিক আদেশ ও নির্দেশনা বাংলায় হচ্ছে।

তবে সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রচলন না হওয়ায় প্রতিকার চাইতে কেউ কেউ আদালতের দ্বারস্থও হন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ২১ ফেব্রুয়ারিসহ অন্যান্য জাতীয় দিবস পালনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা তারিখ ব্যবহারে নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার বাসিন্দা মো. নস্কর আলী রিট করেন। একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, এখনো বিবাদীরা রুলের জবাব দেননি। রুল চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

এর আগে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুল এখনো নিষ্পত্তি হয়নি জানিয়ে শনিবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদেশের পরও বিভিন্ন জায়গায় সাইনবোর্ড ও নম্বরপ্লেট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামফলকে ইংরেজি দেখা যায়।

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রায় দেখা যাবে বাংলায়

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায়-আদেশ এখন থেকে বাংলায় দেখতে গতকাল বিকেলে এক প্রযুক্তিসেবার উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, রায় ও আদেশের ঘরে নির্দিষ্ট মামলা ক্লিক করলে নিচে অনুবাদ (গুগল) বার রয়েছে। এতে ক্লিক করলে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায়টি আসবে। এর ওপরের দিকে ডান পাশে ‘ভাষা নির্বাচনের’ অপশন রয়েছে। ভাষা হিসেবে বাংলা নির্বাচনের পর রায়টি বাংলায় দেখা যাবে। তবে এতে ভাষা ও শব্দগত কিছু দুর্বলতা দেখা যায়, যা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে দ্রুত কেটে যাবে।

এ বিষয়ে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত সব রায়-আদেশ গুগলের প্রযুক্তির সহায়তায় যেকোনো ব্যক্তি বাংলায় অনুবাদ করে দেখতে পারবেন। এতে বিচারপ্রার্থী তার মামলার ফলাফল সম্পর্কে অন্তত জানতে পারবে। প্রযুক্তির এই সংযোজন দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নতুন এক মাত্রা যোগ করল। তবে শব্দ ও ভাষাগত কিছু দুর্বলতা আছে।

ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায় গুগলের মাধ্যমে বাংলায় অনুবাদ করলে ওপরে ‘দায়বর্জন বিবৃতি’ দেখা যায়। এর ভাষ্য, জনসাধারণের বিচারপ্রক্রিয়ায় সহজ অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণের অভিপ্রায়ে বাংলায় অনূদিত রায়-আদেশ দেখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অনূদিত রায় বা আদেশের অনুলিপি সইমুহুরি বা জাবেদা নকলের বিকল্প হিসেবে অথবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না।

জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে বাংলার ব্যবহারে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে বাংলার ব্যবহার নিয়মিত চর্চা ও অনুশীলনের বিষয়। উচ্চ আদালতে এখন বাংলায় রায় দেওয়া বাড়ছে। এতে বিচারপ্রার্থীরা স্বচ্ছন্দ অনুভব করছেন।