বাউলদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা অপরিহার্য: আসক

মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তাঁর ভক্ত ও অনুরাগীদের আয়োজিত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয়ে হামলা, মারধর ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য বলে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠনটি।

আজ সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে আসক। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার বাউলশিল্পীর ক্ষেত্রে আইনানুগ প্রক্রিয়া, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। তারা বলছে, ‘শিল্পী–সংস্কৃতিকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, যা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে আরও সংঘাত, সহিংসতা এবং সামাজিক অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পেতে পারে।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশের অধিকার ও গণজমায়েতে হামলা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়; বরং এটি সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের সুস্পষ্ট উদাহরণ।’

নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকারের প্রসঙ্গ তুলে ধরে আসক বলেছে, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার এবং সংস্কৃতিচর্চার স্বাধীনতা সুস্পষ্টভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। বাউল ঐতিহ্যসহ দেশের সব সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ধারা রক্ষা করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। কোনো গোষ্ঠীর মতাদর্শিক অবস্থান বা সামাজিক চাপের অজুহাতে শিল্প-সংস্কৃতির ওপর হামলা বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা আইন ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।’

সম্প্রতি বাউলশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর হুমকি ও হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আসক বলেছে, ‘এসব ঘটনায় কার্যকর ও সময়োপযোগী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় দেশে শিল্প–সংস্কৃতিবিরোধী গোষ্ঠী আরও উৎসাহিত হয়ে উঠছে এবং একই সঙ্গে হামলার ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি ঘটছে। চলমান এই প্রবণতা আইনের শাসন, মানবাধিকার সুরক্ষা ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার জন্য গভীর হুমকি বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।’