বক্তৃতা করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বক্তৃতা করছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাংবাদিকদের গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার অনুরোধ তথ্য উপদেষ্টার

চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের আকাঙ্ক্ষা ছিল বাংলাদেশকে পুনর্নির্মাণ করা। নতুন বাংলাদেশ গড়ার এ উদ্যোগে সাংবাদিকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

আজ সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলম এ অনুরোধ জানান। ডিআরইউ সদস্যদের জন্য ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির সঙ্গে গ্রুপ বিমা চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

মাহফুজ আলম বলেন, ‘শহীদ ও আহতদের আকাঙ্ক্ষা ছিল, বাংলাদেশ পুনর্নির্মাণ (রিকনস্ট্রাকটেড) করা হবে। নতুনভাবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা হবে। আশা করি, এই প্রক্রিয়াটা চলমান আছে এবং আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমরা কাজ করতে পারব। এ আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো সাংবাদিকদের। এখানে তো আমরা সাংবাদিকদের অনেক সুযোগ-সুবিধা, কল্যাণ এবং নিরাপত্তার কথা বলছি। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের কাছ থেকে আমরা দায়িত্বশীল ভূমিকা দেখতে চাইব।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থেকে অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের গল্প ও সংগ্রামের কথা তুলে আনার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার ও আহতদের দুঃখের গল্প, লড়াইয়ের গল্প আপনারা তুলে আনবেন। প্রতিবেদকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, আপনারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রতি প্রতিশ্রুতি (কমিটমেন্ট) রক্ষা করবেন।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বলার মতো আরও গল্প আছে, যেগুলো মানুষকে জানানো উচিত উল্লেখ করে মাহফুজ আলম বলেন, ‘প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেক শহীদ ও আহত পরিবার আছে, যারা সরকারি সুযোগ-সুবিধা (ফ্যাসিলিটিজ) পায়নি।’

সাংবাদিক সুরক্ষা আইন নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা আসলে অনেক জটিল একটা প্রক্রিয়া। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এটা করার জন্য যে সময়টা দরকার, সেটা হয়তো আমি করে দিয়ে যেত পারব না। এরপরও যেটুকু সময় পাই, এটা আমি একটা পর্যায় পর্যন্ত রেখে দিয়ে যাব। পরবর্তী সময়ে যাঁরা আসবেন, তাঁদের কাছ থেকে আশা করি আপনারা এটা বুঝে নেবেন।’

অনুষ্ঠানে বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, ‘সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে অসহায় সাংবাদিকদের যে অনুদান দেওয়া হয়, তা যৎসামান্য। যদিও সাংবাদিকেরা মাঠে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন।’ সরকারের প্রতি সাংবাদিকদের কল্যাণে আরও বেশি কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজিম উদ্দিন বলেন, ডিআরইউর সঙ্গে এই চুক্তি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য সৌভাগ্যের। সম্প্রতি ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স অতীতের চেয়ে ভালো করছে, এর নেপথ্যে রয়েছে দ্রুত সময়ে ঋণের দাবি পরিশোধ করা।

বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ বলেন, দেশের অর্থনীতিতে ইনস্যুরেন্স বড় ভূমিকা রাখে। কিন্তু গণমাধ্যমে ইনস্যুরেন্স কোম্পানিগুলোর ইতিবাচক দিক কম উঠে আসে। এ জন্য অল্প কিছু কোম্পানির দুর্নাম দায়ী।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন। তিনি বলেন, অতীতে সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর আমরা এটিকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেব না।

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সহসভাপতি গাজী আনোয়ার, সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলামও বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলমও উপস্থিত ছিলেন।