
হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাপ্রতিষ্ঠানকে আইনগতভাবে জন্ম নিবন্ধনের দায়িত্ব দিতে হবে। তাতে জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে শিশুর জন্ম নিবন্ধনের হার বাড়বে। স্বাস্থ্যসেবার আওতায় জন্ম নেওয়া প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশু স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধনের আওতায় আসবে। তবে এর জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন–২০০৪ দ্রুত সংশোধন করা প্রয়োজন। জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার এক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন বক্তারা। গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)।
‘বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন: অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়’ শিরোনামের ওই অনুষ্ঠানে বলা হয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও ভোটাধিকারের মতো মৌলিক নাগরিক অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি উন্নয়ন পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, বাজেট বণ্টন ও সুশাসনে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন নিশ্চিত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও মূলত বেশ কিছু আইনি দুর্বলতা এই লক্ষ্য পূরণে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধনের হার মাত্র ৫০ শতাংশ এবং মৃত্যু নিবন্ধনের হার ৪৭ শতাংশ, যেখানে বৈশ্বিক গড় যথাক্রমে ৭৭ ও ৭৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশ যেমন মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কা ইতিমধ্যেই প্রায় সর্বজনীন নিবন্ধন নিশ্চিত করেছে, সেখানে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে।
ওয়েবিনারে জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, আইন সংস্কারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবাপ্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিলে ২০৩০ সালের মধ্যে সবাইকে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ১৬.৯ ধারা অনুসারে জন্ম নিবন্ধনসহ সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র প্রদান অর্জনে সহায়ক হবে।
ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিসের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. নজরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাপ্রতিষ্ঠানকে আইনগতভাবে নিবন্ধনের দায়িত্ব দেওয়া হলে জন্ম নিবন্ধনের কাজের অগ্রগতি হবে। ৬৭ শতাংশ জন্ম হয় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবাপ্রতিষ্ঠানে। তিনি আরও বলেন, আইন সংশোধনের পাশাপাশি বিদ্যমান আইনের কার্যকর বাস্তবায়নে নিবন্ধন বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। নিবন্ধনের কাজে জনবলঘাটতি দূর ও প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান করতে হবে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের উপসম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান গণমাধ্যমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানাতে প্রতিবেদন তৈরির ওপর জোর দেন। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের কো-অর্ডিনেটর মাশিয়াত আবেদিন।