পণ্য রপ্তানি খাতের নীরব সৈনিক হোম টেক্সটাইল

করোনার প্রভাবে ইউরোপে বেড়ে গেছে বাইসাইকেলের চাহিদা। আবার পিছিয়ে পড়া জুতার রপ্তানির চিত্রও নতুন করে আশা জাগাচ্ছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানিও দিন দিন বাড়ছে। এসব খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, কিছু প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে এসব খাত আরও ভালো করবে। রপ্তানিতে একক পণ্যনির্ভরতা কমাতে হলে দরকার সরকারি নীতিসহায়তা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন করেছেন ফখরুল ইসলামশুভংকর কর্মকার

এক দশকের বেশি সময় ধরে রপ্তানিতে বড় অবদান রাখছে হোম টেক্সটাইল। খাতটি নিয়ে খুব একটা উচ্চবাচ্য না হলেও বিদায়ী অর্থবছরে ১১৩ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় এসেছে এ খাত থেকে। তাতে খাতটির রপ্তানি আয়ে আগের বছরের চেয়ে ৪৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

ঘরে ব্যবহার্য বস্ত্রপণ্যই হোম টেক্সটাইল। যেমন বিছানার চাদর, বালিশ ও বালিশের কাভার, টেবিল ক্লথ, পর্দা, ফ্লোর ম্যাট, কার্পেট, আসবাবে ব্যবহৃত কুশন ও কাভার, খাবার টেবিলের রানার, কৃত্রিম ফুল, নকশিকাঁথা, কম্বলের বিকল্প কমফোর্টার, বাথরুম টাওয়েল ইত্যাদি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্বের ৪৭টি দেশে বাংলাদেশের হোম টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তবে আমেরিকা ও উত্তর আমেরিকায় রয়েছে বাংলাদেশের বড় বাজার। হোম টেক্সটাইল খাতে ১৪৭টি প্রতিষ্ঠান থাকলেও বর্তমানে রপ্তানি করছে ৬০টি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নোমান গ্রুপ, হোম টেক্সটাইল লিমিটেড, সাদ গ্রুপ, অলটেক্স।

দশ বছর আগে, অর্থাৎ ২০১১-১২ অর্থবছরে হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি আয় ছিল ৯০ কোটি ডলার। মধ্যে আবার কমে যায়। যেমন বিদায়ী অর্থবছরের আগের চার বছর রপ্তানি ছিল ৭৫ থেকে ৮৭ কোটি ডলারের মধ্যে। বিদায়ী অর্থবছরটি পুরোপুরি করোনায় আক্রান্ত ছিল। তার মধ্যেও হোম টেক্সটাইলের রপ্তানি এক লাফে ৩৮ কোটি ডলার বেড়ে যাওয়ায় শতকোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের ঘরে পৌঁছে যায়।

অবশ্য হোম টেক্সটাইলের বিশ্ববাজারের আকার ১৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের। তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রেই ৮ হাজার কোটি ডলারের বাজার আছে। তবে সম্ভাবনা থাকলেও বাংলাদেশে এ খাতে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। নীতি সহায়তা দিয়ে খাতটিতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা গেলে দেশের পণ্য রপ্তানি আয় অনেকখানি বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন হোম টেক্সটাইল খাতের ব্যবসায়ীরা।