Thank you for trying Sticky AMP!!

দেশে চাহিদার চেয়ে হিসাববিদ কম

ঢাকায় গতকাল দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি: ব্যবসা নেতৃত্ব তৈরির প্রবেশদ্বার’ শীর্ষক ছাত্র সম্মেলনে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন l প্রথম আলো

হিসাববিদেরা ব্যবসায় নেতৃত্ব দেন। তাঁদের বেতন–ভাতাও তুলনামূলক বেশ ভালো। হিসাববিদেরা ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। হিসাব পেশা হলো ব্যবসার ভাষা।

গতকাল শনিবার দেশের বিশিষ্ট হিসাববিদেরা এসব কথা বলেন। এভাবেই তাঁরা সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থীর সামনে হিসাববিদ পেশার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা আরও বলেন, চাহিদা অনুযায়ী দেশে হিসাববিদদের সংকট রয়েছে। বর্তমানে ১৮ হাজার হিসাববিদের চাহিদা আছে। কিন্তু দেশে মাত্র ১ হাজার ২০০–র মতো হিসাববিদ আছেন। তাই নিজের ক্যারিয়ার গঠনে এই বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন তরুণ-তরুণীরা।

হিসাব পেশায় পড়ানো ও ক্যারিয়ার গঠনে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) প্রথমবারের মতো ছাত্র সম্মেলনের আয়োজন করেছে। রাজধানীর সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি: ব্যবসা নেতৃত্ব তৈরির প্রবেশদ্বার’ শীর্ষক এই সম্মেলন হয়। এতে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

স্বাগত বক্তব্যে আইসিএবি সভাপতি আদিব হোসেন খান বলেন, ‘আমি খুবই অভিভূত যে, এখানে ৪০০–র মতো তরুণ-তরুণী এসেছেন; যাঁরা ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবেন। হিসাববিদেরাই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে থাকেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ এখানে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা একটি স্বপ্ন নিয়ে যাবেন।’

আইসিএবির সহসভাপতি মোস্তফা কামাল এক উপস্থাপনায় কীভাবে হিসাববিদ পেশায় প্রবেশ করা যায়, তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ১৮ হাজার হিসাববিদের চাহিদা আছে। কিন্তু আছেন মাত্র ১ হাজার ২০০–র মতো। এই পেশায় বেতনও তুলনামূলক বেশ ভালো। তিনি আরও বলেন, আগে একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হলে পুনরায় সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হতো। এখন যে বিষয়ে পাস করেন শিক্ষার্থীরা, তাঁকে আর ওই বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয় না।

অনুষ্ঠানের পরের পর্বে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী কিংবা উচ্চপদে আছেন এমন হিসাববিদেরা উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আইসিএবির সাবেক সভাপতি পারভীন মাহমুদ বলেন, এটি খুবই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পেশা। একসময় আইসিএবিতে মাত্র চারজন নারী হিসাববিদ ছিলেন। এখন ১০০ জনের বেশি নারী হিসাববিদ আছেন। এটি বেশি অনুপ্রেরণামূলক।

এক্সসেনচার সিআইএ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ রায়হান সামসির মতে, এ দেশের হিসাববিদদের মান আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের। শিক্ষার্থীদের এখানে হাতে–কলমে শেখানো হয়।

দ্য কম্পিউটারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার আতিক ই রাব্বানী বলেন, হিসাব পেশা হলো ব্যবসার ভাষা (ল্যাংগুয়েজ অব বিজনেস)। এই বিষয়ে পড়াশোনা একধরনের বিনিয়োগ। এর মুনাফা সারা জীবন ধরে পাওয়া যায়।

নিউজিল্যান্ড মিল্ক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামছুল আলম মল্লিক বলেন, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে হিসাববিদের পেশার মতো ভালো পেশা নেই।

এই পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন নভিস্তা ফার্মার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকতার মতিন চৌধুরী ও ইমার্জিং ক্রেডিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর-ই-খোদা আবদুল মুবিন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কুইজ বিজয়ীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৌহিদুল ইসলাম ও শারমীন সাকি এবং বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রবিউল ইসলাম।

এ ছাড়া সেনা মালঞ্চ মিলনায়তনে দেশের ১০টি হিসাব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের শিক্ষা কার্যক্রম তুলে ধরতে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে। প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হলো কেপিএমজি, এম জে আবেদীন অ্যান্ড কোং, হোসেন ফরহাদ অ্যান্ড কোং, আহমেদ খান অ্যান্ড কোং।