বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক চূড়ান্ত অনুমোদন পেল

আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক মিলে নতুন ব্যাংক গঠিত হচ্ছে।

পাঁচ ব্যাংক একীভূত করে গঠিত সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য পরিচালকেরাও উপস্থিত ছিলেন।

আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ায় শরিয়াহ্‌ভিত্তিক এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক মিলে নতুন এ ব্যাংক গঠিত হচ্ছে। নতুন ব্যাংক ৩৫ হাজার কোটি টাকার পরিশোধ মূলধন নিয়ে যাত্রা শুরু করবে। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা আমানতকারীদের জমানো টাকার বিপরীতে শেয়ার দেওয়া হবে। এ ছাড়া সরকারি তহবিল এই ব্যাংকে রাখা হবে। একই সঙ্গে আকর্ষণীয় মুনাফা দিয়ে সাধারণ আমানতকারীদের অর্থ রাখাতে উদ্বুদ্ধ করা হবে। এ ছাড়া ঋণ আদায়সহ বিভিন্নভাবে তারল্য প্রবাহ বাড়ানো হবে।

জানা গেছে, নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যুর পর একীভূত হওয়া পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা ফেরতের বিষয়ে চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি স্কিম কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে। সেখানে আমানতকারী ব্যক্তিরা কীভাবে টাকা তুলতে পারবেন, তার বিস্তারিত উল্লেখ করা হবে। শুরুতে আমানত বিমা তহবিল থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করা হবে। বাকি টাকা ধাপে ধাপে তুলতে পারবেন আমানতকারী ব্যক্তিরা। কোন উপায়ে টাকা তুলতে পারবেন, কী হারে মুনাফা দেওয়া হবে—এই স্কিমে তার বিস্তারিত ঘোষণা থাকবে।

সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের জন্য প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিলে সেনা কল্যাণ ভবনে একটি কার্যালয় নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় একটি চলতি হিসাবও খোলা হয়েছে। শিগগিরই পরিচালনা পর্ষদ গঠন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে গত ৫ নভেম্বর প্রশাসক নিয়োগ ও ব্যাংকগুলোর শেয়ার শূন্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ৫টি ব্যাংকে বর্তমানে ৭৫ লাখ আমানতকারীর জমা আছে ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে ঋণ রয়েছে ১ লাখ ৯৩ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন উপায়ে ঋণের বেশির ভাগ বের করে নিয়েছেন এস আলম, নাসা, বেক্সিমকো, সিকদারসহ কয়েকটি গ্রুপ। ফলে বর্তমানে এসব ব্যাংকের ১ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা বা ৭৬ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। সারা দেশে এসব ব্যাংকের ৭৬০টি শাখা, ৬৯৮টি উপশাখা, ৫১১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯৭৫টি এটিএম বুথ রয়েছে। একীভূত হওয়ার পর একই এলাকার একাধিক শাখা মিলে একটি বা দুটি করা হবে। ব্যাংকগুলোর পরিচালন খরচ কমাতে এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।