Thank you for trying Sticky AMP!!

মতিঝিলে জমি বেচল ইসলামী ব্যাংক

জমিটি কিনতে কেন্দ্রীয় ব্যাাংকের খরচ হয়েছে ১১০ কোটি টাকা।

রাজধানীর মতিঝিল এলাকার সেনাকল্যাণ ভবনের পাশের এই জমির পরিমাণ ৭০ দশমিক ৮২ শতক।

এই জমি কিনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের খরচ হয়েছে ১১০ কোটি টাকা

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড তার প্রধান কার্যালয়ের ভবন তৈরির জন্য রাজধানীর মতিঝিল এলাকার সেনাকল্যাণ ভবনের পাশে ৭০ দশমিক ৮২ শতক জমি কিনেছিল। এখন সেই জমি বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে বেসরকারি খাতের ব্যাংকটি। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের খরচ হয়েছে ১১০ কোটি টাকা। জমিটি বাংলাদেশ ব্যাংক-সংলগ্ন না হলেও কাছাকাছিই। জমির ঠিকানা ১৯৬, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক এমন এক সময়ে এই জমি কিনল, যখন সংকটে পড়ে ইসলামী ব্যাংককে প্রতিনিয়ত তারল্য সহায়তা নিতে হচ্ছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে নীতি ছাড়ও পেয়েছে ব্যাংকটি। বিশেষ সুবিধার আওতায় তারল্য জোগানও দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক এমন এক সময়ে জমিটি কিনল যখন ইসলামী ব্যাংককে প্রতিনিয়ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা নিতে হচ্ছে। 

Also Read: ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই ইসলামী ব্যাংকের এই জমি কেনা নিয়ে আলোচনা চলছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। জমি কেনা সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বর্ধিত ভবন নির্মাণ হবে এই স্থানে। পাশাপাশি সেনাকল্যাণ ভবন কেনার জন্যও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারা ভবনটির দাম ৬০০ কোটি টাকা চাইছে।’

জানা গেছে, ইসলামী ব্যাংকের জমিটি কিনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎপরতা নতুন ছিল না। অর্থনীতিবিদ আতিউর রহমান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকাকালেই এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেন। তখন এক রকম দরদামও ঠিক করা হয়েছিল। তবে ইসলামী ব্যাংক তখন জমিটি ছাড়তে রাজি ছিল না। এরপর নানা সময়ে আলোচনা হলেও সায় দেয়নি ব্যাংকটি।

সম্প্রতি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের কাছে জমির কাগজ হস্তান্তর করেন ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা। এ সময় উভয় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্রগুলো জানায়, আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর পদে যোগ দেওয়ার পরই এ নিয়ে তৎপরতা বাড়ান। এ সময় ব্যাংকটিও নানা সমস্যার মধ্যে পড়ে। ফলে ব্যাংকটির মালিকপক্ষ জমিটি ছেড়ে দিতে বলে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই সম্প্রতি জমির দলিল সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে ব্যাংকটিকে জমির দাম পরিশোধ করে দিয়েছে।

জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রধান কার্যালয়ের ভবন তৈরির জন্য আমরা জায়গাটি কিনেছিলাম। সেটা প্রায় ২০ বছর আগে। জায়গাটি বাংলাদেশ ব্যাংক-সংলগ্ন। বাংলাদেশ ব্যাংক তা কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করায় তাদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে।’

জমিটিতে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে আগের স্থাপনায় ইসলামী ব্যাংকের যেসব বিভাগ ছিল, সেগুলো ইতিমধ্যে সরে গেছে। সেখানে ইসলামী ব্যাংকের এটিএম ও টাকা জমা দেওয়ার একটি ক্যাশ রিসাইক্লিং যন্ত্রও (সিআরএম) ছিল, সেগুলোও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এখন ওই স্থাপনা ভাঙার কাজ চলছে।

Also Read: খতিয়ে দেখা হচ্ছে ইসলামী ব্যাংকের শতকোটি টাকার বেশি ঋণের তথ্য

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ওই জমিতে দ্রুততম সময়ে সর্বাধুনিক সুবিধা ও নিরাপত্তাসংবলিত একটি ভবন তৈরির কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কারণ, বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিনটি নিজস্ব ভবন থাকলেও তাতে জায়গার সংকুলান হচ্ছে না। এ জন্য সেনাকল্যাণ ভবনের বেশির ভাগ তলা ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Also Read: ‘ভয়ংকর নভেম্বরের’ পর ডিসেম্বরেও অনিয়ম

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীর সংখ্যা এখন প্রায় ১০ হাজার।বিভাগ, প্রকল্প ও ইউনিট রয়েছে ৬৬টি।কয়েকটি বিভাগে বসার ব্যবস্থা বেশ গাদাগাদি।অনেক কর্মকর্তার বসার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেই।