
ঢাকা সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং তোবগে মনে করেন, তাঁর দেশের গেলেফু করিডর ব্যবহার করে আঞ্চলিক সংযোগ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা আরও বাড়ানো যেতে পারে। বিশেষ করে এই করিডরের মাধ্যমে বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলায় অবস্থিত ভুটানি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটিকে সরাসরি যুক্ত করা যাবে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে নতুন অর্থনৈতিক প্রবাহ তৈরি হবে।
আজ রোববার ঢাকার একটি হোটেলে সরকারের দুই সংস্থা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন অভিমত দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা জোরদারে আঞ্চলিক যোগাযোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বেজা ও বিডা।
বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনৎসিলসহ দেশটির ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা এবং বেজার নির্বাহী সদস্য নজরুল ইসলামসহ বিডা, বেজা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৩ সালে কুড়িগ্রাম জেলায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের আগ্রহ জানায় ভুটান সরকার। এরপর গত বছরের মার্চে ভুটানের রাজা বাংলাদেশ সফরে আসেন। তখন সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে (জি–টু–জি) বিশেষ ভুটানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তবে সমঝোতা স্মারক সই হলেও এখন পর্যন্ত ডেভেলপার নিয়োগ কিংবা চুক্তির শর্ত তৈরির মতো কোনো কাজ আগায়নি।
অন্যদিকে ভুটান সরকার তাদের দেশে ‘গেলেফু’ নামক একটি জীববৈচিত্র্য নগর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নত ও টেকসই অবকাঠামো তৈরি করা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় নির্মাণ উপকরণ ও অন্যান্য জিনিস বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে পারে ভুটান। গেলেফু থেকে কুড়িগ্রামে করিডর তৈরির মাধ্যমে সরাসরি আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব।
এ প্রসঙ্গে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাশো শেরিং বলেন, ‘কুড়িগ্রাম বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটিকে ভুটানের আসন্ন বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ‘‘গেলেফু মাইন্ডফুলনেস সিটির’’ সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে। এতে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে।’
বৈঠকে বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘কুড়িগ্রাম ও গেলেফু আমাদের যৌথ অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের পরিপূরক ইঞ্জিন হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশের রয়েছে বৃহৎ বাজার, দক্ষ মানবসম্পদ ও বৈশ্বিক সংযোগের শক্তি। আর ভুটানের রয়েছে টেকসই উন্নয়ন, উদ্ভাবনী দৃষ্টি ও মানবিক মূল্যবোধ। এই দুই শক্তির সমন্বয় সীমান্ত অতিক্রম করে নতুন প্রজন্মের অর্থনৈতিক সহযোগিতার মডেল গড়ে তুলবে।’