ভারত-পাকিস্তান থেকে এক লাখ টন চাল আমদানি হচ্ছে

ভারত ও পাকিস্তান থেকে মোট এক লাখ টন চাল আমদানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভারত থেকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে আনা হবে ৫০ হাজার টন সেদ্ধ চাল। আর পাকিস্তান থেকে সরকারি পর্যায়ে (জিটুজি) দরপত্র ছাড়া সরাসরি ৫০ হাজার টন আতপ চাল আনা হবে।

সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ দুটি প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য এবং রাজনীতিকে আলাদা করে দেখতে হবে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বাইরে যতটা শোনা যায়, বাস্তবে সম্পর্ক ততটা খারাপ নয়। আমরা অবশ্যই ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক করতে চাই। চেষ্টা করে যাচ্ছি কোনোভাবেই যেন ভারতের মতো বড় প্রতিবেশীর সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক না হয়।’

বৈঠক শেষে আরও জানানো হয়, সেদ্ধ চাল সরবরাহের কাজ পেয়েছে ভারতীয় কোম্পানি পাত্তাভি অ্যাগ্রো ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড। দাম প্রতি টন ৩৫৫ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশের প্রায় ২১৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার মতো। আর পাকিস্তানি চালের সরবরাহকারী ট্রেডিং করপোরেশন অব পাকিস্তান (টিসিপি)। এ চালের টনপ্রতি দাম পড়বে ৩৯৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৪১ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

চাল ক্রয়ের প্রস্তাব ছাড়াও আজকের সভায় খাদ্যপণ্যের আরও পাঁচটি আলাদা প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিক্রির জন্য কেনা হবে সয়াবিন তেল, মসুর ডাল ও রাইস ব্র্যান তেল।

সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে; অর্থাৎ দরপত্র ছাড়া মোট ৩ কোটি ৭৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল আমদানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রাজিল উৎসের ২ কোটি লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে নাইজেরীয় কোম্পানি ভাইডক ফার্মস অ্যান্ড এক্সপোর্টস লিমিটেড। প্রতি লিটারের দাম পড়ছে ১২১ দশমিক ৩২ টাকা। এতে মোট ব্যয় হবে ২৪২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি স্টুয়ার্ড ক্লোবানু গার্হার্ড ১ কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহের কাজ পেয়েছে। ১৩২ দশমিক ৬৯ টাকা লিটার দরে তানজানিয়া উৎসের এ সয়াবিন তেল আমদানিতে ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি টাকা। আর মালয়েশীয় কোম্পানি সি মিলেনিয়াম ট্রেড ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল সরবরাহ করবে ১৩২ দশমিক শূন্য ৮ টাকা লিটার দরে। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৪ লাখ টাকা।

এদিকে স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১৬৭ কোটি ৯০ লাখ টাকায় মোট ১ কোটি লিটার রাইস ব্র্যান বা কুঁড়ার তেল সরবরাহের কাজ পেয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে গাইবান্ধার প্রধান ওয়েল মিলস ২৫ লাখ লিটার এবং ঢাকার গ্রিন ওয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ ২৫ লাখ লিটার ও মজুমদার প্রোডাক্টস ৫০ লাখ লিটার রাইস ব্র্যান তেল সরবরাহ করবে। প্রতি লিটার তেলের দাম ১৬৭ দশমিক ৯০ টাকা।

এ ছাড়া স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার টন মসুর ডাল সরবরাহের কাজ পেয়েছে খুলনার ফুলতলার প্রতিষ্ঠান জয়তুন অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিলস। প্রতি কেজি ডালের দাম পড়ছে ৭২ দশমিক ২০ টাকা।