বাণিজ্য মেলা
বাণিজ্য মেলা

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু ১ জানুয়ারি, উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা

মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) শুরু হচ্ছে আগামী ১ জানুয়ারি। এটি ডিআইটিএফের ৩০তম আসর। মেলার যৌথ আয়োজক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে প্রধান অতিথি হিসেবে ১ জানুয়ারি সকাল ১০টায় এ মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

এবারের মেলার আনুষ্ঠানিক নাম রাখা হয়েছে ‘৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) ২০২৬।’ ইপিবি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকার আগারগাঁওয়ে ডিআইটিএফ হয়ে আসছিল ১৯৯৫ সাল থেকে। পরবর্তীকালে চীন ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহরে ২০ একর জায়গায় নির্মাণ করা হয় বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। ২০২২ সাল থেকে বাণিজ্য মেলা সেখানেই হয়ে আসছে।

আন্তর্জাতিক চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন

শুরুর পর থেকে ডিআইটিএফ প্রতিবছর হয়ে এলেও মেলাটির ‘আন্তর্জাতিক চরিত্র’ হয়ে ওঠা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় প্রতিবছরই। এমনকি ইপিবি কার্যালয়ে গত ১৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত সংস্থাটির ১৪৮তম পরিচালনা পর্ষদেও এমন প্রশ্ন ওঠে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, আগামী বছর (২০২৬) থেকে ডিআইটিএফের নাম হবে ঢাকা বাণিজ্য মেলা (ডিটিএফ)। মেলার এত দিনের নাম থেকে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি বাদ দেওয়া হবে।

বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, দেশি-বিদেশি ক্রেতা-বিক্রেতা নিয়ে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজনের লক্ষ্য ছিল—বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন। সেই সঙ্গে স্থানীয় বাজারের সঙ্গে তাদের পরিচিত করানো। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠান দূতাবাস বা সরকারি প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে অংশগ্রহণ না করে স্থানীয় এজেন্ট বা ব্যক্তির মাধ্যমে অংশ নিচ্ছে। ফলে পণ্য ও সেবার মান যাচাই করা যাচ্ছে না। অনেক সময় মানহীন বা স্থানীয়ভাবে তৈরি পণ্যও বিদেশি ব্র্যান্ড নামে উপস্থাপন করা হচ্ছে। বিদেশি ব্র্যান্ড বা উৎপাদকেরা সরাসরি না থাকায় ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন। প্রদর্শনীর আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

ইপিবির তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনও (বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব) ওই বৈঠক শেষে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, পরিচালনা পর্ষদের পর্যবেক্ষণে এসেছে, নামে আন্তর্জাতিক হলেও এটা প্রকৃত অর্থে আন্তর্জাতিক মেলা নয়। তাই মেলার নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নামে আন্তর্জাতিক শব্দ থাকছেই

ইপিবি সূত্রগুলো জানায়, ইপিবির পরিচালনা পর্ষদের অন্য সদস্যরা বিরোধিতা করলেও বাণিজ্য উপদেষ্টা ও ইপিবির তৎকালীন ভাইস চেয়ারম্যান মেলার নাম ডিআইটিএফের বদলে ডিটিএফ করার ব্যাপারে অনড় ছিলেন। যদিও পরে বাণিজ্য মেলার স্টিয়ারিং কমিটির কাছে এ প্রস্তাব টেকেনি। অর্থাৎ মেলার নাম থাকছে আগের মতোই।

এদিকে দর্শনার্থীদের দেশের ইতিহাস জানার সুযোগ দিতে এবারের মেলায় ‘বাংলাদেশ স্কয়ার’ নামে প্রাঙ্গণ রাখা হচ্ছে। মেলায় ৩২০টির মতো স্টল থাকবে এবং প্রবেশ টিকিটের দাম থাকছে গতবারের মতোই ৫০ টাকা।

আজ বুধবার ইপিবি জানিয়েছে, ২৯ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ৩০তম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার সার্বিক দিক তুলে ধরবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, এবারের মেলায় ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, ইরান, সিঙ্গাপুর ও আফগানিস্তানের স্টল থাকতে পারে। ২৯ ডিসেম্বর মেলার সার্বিক আয়োজনের দিক সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরা হবে। এবারের মেলায় আফগানিস্তানের কোনো মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে আলোচনা চলছে।