
প্রায় ৫৮ বছরের পুরোনো জাগুয়ার ব্র্যান্ডের স্ক্র্যাপ গাড়ি শখের বসে কিনেছিলেন পান্থপথের এক ক্রেতা। তারপর আড়াই বছর ধরে বিদেশ থেকে যন্ত্রপাতি আমদানি করে তিনি গাড়িটি নতুন করে সংযোজন করেন। তাতে ৬০ বছরের গাড়িটি এখন রূপ নিয়েছে নতুন গাড়িতে। সেই গাড়িটিই আজ শনিবার প্রদর্শিত হয়েছে রাজধানীর পূর্বাচলে বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে। জাগুয়ার নাইট গ্রে রঙের গাড়িটি বাজারে আসে ১৯৬৭ সালে। গতকাল প্রদর্শনীতে এই গাড়িকে ঘিরে ছিল দর্শনার্থীদের ভিড়।
৫৮ বছরের পুরোনো জাগুয়ারের মতো আরও ১১০টি গাড়ি প্রদর্শিত হয় দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে। পাশাপাশি প্রদর্শন করা হয় নতুন আরও ১৫০টির বেশি গাড়ি, যার বেশির ভাগই ছিল দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি। গাড়ির মালিকেরা এসব গাড়ি প্রদর্শনীতে নিয়ে আসেন। পাশাপাশি ছিল ১২টি বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের গাড়ি। জেনারেশন হুইলস নামে এই আয়োজনে সব মিলিয়ে তিন শতাধিক নতুন–পুরোনো গাড়ি প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনীটির আয়োজন করে যুক্তরাজ্যের ইঞ্জিন ওয়েল প্রতিষ্ঠান শেল হেলিক্স।
আয়োজকেরা জানান, এই গাড়ি প্রদর্শনী আয়োজনে অংশ নেয় সাতটি ভিনটেজ বা পুরোনো গাড়ির ক্লাব এবং গ্রুপ। এসব ক্লাব এবং গ্রুপ প্রদর্শনীর জন্য ১১০টি পুরোনো গাড়ি এনেছে। এসব গাড়ি ৬০ থেকে ৩০ বছরের পুরোনো। এ ছাড়া পোরশে, হোন্ডা, মার্সিডিজ বেঞ্জ, মিতসুবিশিসহ ১৫০টির বেশি আধুনিক গাড়িও প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ, মিতসুবিশি, হোন্ডা, বিওয়াইডিসহ মোট ১২টি ব্র্যান্ড প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। এ ছাড়া মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড সুজুকি ও হোন্ডাও তাদের নতুন এবং পুরোনো মডেলের মোটরসাইকেল নিয়ে আসে প্রদর্শনীতে।
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া পুরোনো গাড়ি ক্লাবের মধ্যে ছিল ফক্সভাগেনের বাংলাদেশ ক্লাব। তারা ফক্সভাগেনের বিটল মডেলের আটটি গাড়ি নিয়ে আসে। এসব গাড়ির বেশির ভাগই তৈরি হয়েছিল ১৯৬৫ সালে তৈরি। তাই এই স্টলকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদের ছিল বাড়তি কৌতূহল।
ফক্সভাগেনের বাংলাদেশ ক্লাবের অ্যাডমিন দিদারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের গাড়িকে অন্যান্য দেশে “জুয়েল অফ দ্য সিটি” বলা হয়। তবে আমাদের দেশে বলা হয় পুরোনো গাড়ি। বিশ্বের অনেক দেশে ২৫ বছরের পুরোনো গাড়ি থেকে কোনো কর নেওয়া হয় না। তবে আমাদের প্রতিবছর এসব গাড়ির জন্য ৬০ হাজার টাকা কর দিতে হয়।’
প্রদর্শনীতে অংশ নেয় এমন আরেকটি পুরোনো গাড়ির ক্লাব জাপানিজ এন্টিক অটোমোবাইল অব বাংলাদেশ। এই গ্রুপের সদস্য হুমায়ন ইউনুস কবির। ১৯৭৩ সালে তৈরি নিশান ব্র্যান্ডের দাটসুন ১২০ ওয়াই মডেলের গাড়ি নিয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নেন তিনি। হুমায়ন ইউনুস কবির বলেন, ‘গাড়িটি আমার পরিবার সংগ্রহ করছে প্রায় ৫১ বছর আগে।’
এ ছাড়া মেলায় আরও আকর্ষণ হিসেব ছিল পুরোনো ল্যান্ড রোভার, জিপ ব্র্যান্ডের উইলিয়াম মডেল, মিনি কুপার, টয়োটা, হোন্ডা, নিশানসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ি।
নতুন কিছু গাড়ি নিয়ে মেলায় অংশ নেয় মার্সিডিজ বেঞ্জ। প্রতিষ্ঠানটির বাংলাদেশের সিইও রেদওয়ানুল জিয়া বলেন, ‘প্রদর্শনীতে আমরা চারটি মডেলের গাড়ি এনেছি।’
প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া নতুন গাড়ির ব্র্যান্ড মরিস গ্যারেজের স্টলে ছিল ১৯৭১ সালে তৈরি এমজি বি মডেলের গাড়ি। আর মিতসুবিশির স্টলে ছিল ১৯৭৯ সালে তৈরি দ্বিতীয় জেনারেশনের লেন্সার মডেলের গাড়ি।