
বেসরকারি খাতকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তাঁরা দেশে মানসিক স্বাস্থ্য খাতে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে এ আহ্বান জানান, যাতে সবার জন্য সেবা নিশ্চিত হয়।
বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষে সাজেদা ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ‘সংকট থেকে সেবা: মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সংলাপ ও পদক্ষেপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা বলেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। তা সত্ত্বেও ১৭ কোটির অধিক জনসংখ্যার এই দেশে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা তেমন গুরুত্ব পায় না, যেখানে ২ কোটি ৮০ লাখের বেশি মানুষ বিভিন্ন ধরনের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে সাজেদা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাহিদা ফিজ্জা কবির বলেন, দুর্যোগের পরেই কেবল মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবা উচিত নয়। বিষয়টিকে দুর্যোগ মোকাবিলা ব্যবস্থায় অঙ্গীভূত করা দরকার, যাতে প্রয়োজনের সময় যথাযথ সেবা দেওয়া যায়। তিনি মানসিক স্বাস্থ্য খাতে সবার জন্য, বিশেষ করে দুর্যোগের সময়ে মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকারি ও এনজিওর পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জাহিদা ফিজ্জা কবির মানসিক স্বাস্থ্য খাতে একটি একক নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং অভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরের (এসওপি) প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক এস এম মুস্তাফিজুর রহমান মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের জন্য আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি, বহুপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, দেশের মোট স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র শূন্য দশিমক ৫ শতাংশ পায় মানসিক স্বাস্থ্য খাত। এই অর্থের বেশির ভাগই আবার চলে যায় প্রাতিষ্ঠানিক বরাদ্দে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় বড় ঘাটতি রয়েছে। এখানে মাত্র ১ হাজার ৫২৫ জন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কর্মী আছেন, যাঁদের মধ্যে ২৬০ জন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, ৫৬৫ জন মনোবিজ্ঞানী এবং ৭০০ জন নার্স।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান শাহানুর হোসেন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক নিয়াজ মোহাম্মদ খান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) পরামর্শক শাহরিয়ার ফারুক, সাজেদা ফাউন্ডেশনের ডেপুটি সিইও মোহাম্মদ ফজলুল হক, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের উপদেষ্টা সৈয়দ মোহাম্মদ নুরুদ্দিন, জাতিসংঘের নারী উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেনের সমন্বয় ও অংশীদারত্ব বিশ্লেষক সৈয়দা সামারা মোর্তদা এবং ইউনিসেফের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপক দেওয়ান মোহাম্মদ এমদাদুল হক প্রমুখ।