Thank you for trying Sticky AMP!!

‘প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে সারা দেশে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব পদে আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী। এ পরীক্ষার তারিখ ও কেন্দ্র নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে  গুজব ছড়ানো হচ্ছে। এসব গুজব থেকে চাকরিপ্রার্থীদের সতর্ক থাকতে বলেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। ফেসবুকে যেসব প্রচার করা হচ্ছে, সেগুলো গুজব। একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব করছে। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

কবে পরীক্ষা হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, শিগগির পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হলে গণমাধ্যম ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। গুজবে কান না দিয়ে পরীক্ষার্থীদের ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

১০ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী এপ্রিল মাসের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া শেষে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের আগামী জুলাই মাসের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এপ্রিল মাসের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হলেও তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে একটি মহল। এতে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

সিরাজুল ইসলাম নামের এক চাকরিপ্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার দিন ধরে প্রাথমিকের পরীক্ষা নিয়ে নানা কথা ছড়ানো হচ্ছে। গত পরশু ফেসবুকে বিভিন্ন চাকরির গ্রুপে দেখলাম, আগামী ১ এপ্রিল পরীক্ষা শুরু। আজ আবার দেখলাম ৮ এপ্রিল শুরু। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের স্বাক্ষর নকল করে এসব গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’

সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘একেক সময় একেক তথ্য পাওয়ার কারণে বিভ্রান্তিতে পড়ে যাই। নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখি এ-সংক্রান্ত কোনো নোটিশ নেই। আমি ওয়েবসাইটে ঢুকে চেক করলেও অনেকে চেক না করেই ভুয়া বিজ্ঞপ্তি শেয়ার করছে। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে।’

শিগগির পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হলে গণমাধ্যম ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জানানো হয়েছিল, সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে অবসর নেওয়ার কারণে আরও ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্য পদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্য পদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

প্রাথমিকের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর অনলাইনে আবেদন শুরু হয়। আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ জন প্রার্থী। সে হিসাবে ১টি পদের জন্য প্রতিযোগিতা হবে ২৯ প্রার্থীর মধ্যে।
সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা বিভাগে—২ লাখ ৪০ হাজার ৬১৯টি। এরপর রাজশাহীতে ২ লাখ ১০ হাজার ৪৩০, খুলনায় ১ লাখ ৭৮ হাজার ৮০৩, ময়মনসিংহে ১ লাখ ১২ হাজার ২৫৬, চট্টগ্রামে ১ লাখ ৯৯ হাজার ২৩৬, বরিশালে ১ লাখ ৯ হাজার ৩৪৪, সিলেটে ৬২ হাজার ৬০৭ এবং রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৯৬ হাজার ১৬৬টি।

সহকারী শিক্ষক পদে ৩০ বছর পূর্ণ হওয়া প্রার্থীরাও আবেদনের সুযোগ পেয়েছেন। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ যাঁদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, সরকারি চাকরিতে তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের আলোকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তিতে বলেছিল, ২০২০ সালের ২০ অক্টোবরে বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২০২০ সালের ২৫ মার্চ প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর ছিল।