দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীরা
দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীরা

৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ

পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ এবং অধিযাচিত শূন্য পদসমূহে দ্রুততম সময়ে সুপারিশ—এই দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশী প্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) কার্যালয়ের সামনে শতাধিক প্রার্থী অবস্থান নেন এবং তাঁদের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

প্রার্থীরা জানিয়েছেন, কমিশনের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছিল—৪৩তম বিসিএসের নামে পিএসসির নিকট কোনো শূন্য পদ নেই। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অধিযাচন এলে সুপারিশ করা সম্ভব হবে। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে পিএসসি মনোনয়নের অভিমত প্রদান করে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দপ্তরের কাছে অধিযাচন চেয়ে পত্র প্রেরণ করে। এর ধারাবাহিকতায় ৭ মে ২০২৫ তারিখে ৮ হাজার ৫০১টি এবং পরবর্তী সময়ে আরও কিছু পদসহ প্রায় ৯ হাজার শূন্য পদ কমিশনে প্রেরিত হয়।

কিন্তু এত বিপুলসংখ্যক শূন্য পদ প্রাপ্তির পরও কমিশন বিদ্যমান ‘নন-ক্যাডার নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা, ২০২৩’ অনুসারে সুপারিশ না করে বরং ২২ মে ২০২৫ তারিখে তা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও সংশোধিত বিধি এখনো গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়নি। তাঁরা বলছেন, যে বিধি তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, সেটিই এখন পরিকল্পিত বিলম্বের শিকার হচ্ছে।

মানববন্ধনে প্রার্থীরা বলেন, পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত শূন্য পদে দ্রুততম সময়ে সুপারিশ করা তাঁদের মূল দাবি। একজন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘বিগত কমিশনকে মহামান্য হাইকোর্ট ইতিমধ্যে ৪৩তম বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে বিসিএস ইতিহাসে ৪৩তম বিসিএসই একমাত্র, যা এখনো পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় নজিরবিহীন অবস্থায় রয়েছে।’

প্রার্থীদের অভিযোগ, শূন্য পদ থাকলেও কমিশন সুপারিশ কার্যক্রম শুরু না করায় ন্যায্য ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। একজন বলেন, ‘প্রতিটি পদই তরুণ প্রার্থীর স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘ বিলম্ব শুধু আমাদের জীবন ও ক্যারিয়ারে প্রভাব ফেলছে না, বরং তা সরকারি চাকরির স্বচ্ছতা ও কার্যকর নীতিমালার ওপরও ছাপ ফেলে।’

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা কমিশনের নীতিমালার মধ্যে দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান

৪৩তম বিসিএসে প্রথমবারের মতো ক্যাডার ও নন-ক্যাডারের ফল একসঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছিল। ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর মোট ২ হাজার ৮০৫ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়—২ হাজার ১৬৩ জনকে ক্যাডার এবং ৬৪২ জনকে নন-ক্যাডারে। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও এখনো পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা কমিশনের নীতিমালার মধ্যে দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তাঁরা বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার কারণে অনেক প্রার্থীর মানসিক চাপ বেড়ে গেছে এবং বয়স ও ক্যারিয়ারগত সীমাবদ্ধতার কারণে কর্মসংস্থানের স্বাভাবিক পথও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।