Thank you for trying Sticky AMP!!

এসএসসি পরীক্ষায় পায়ে লিখে এবারও জিপিএ-৫

পরীক্ষার হলে আজিজুল হক। ফাইল ছবি

দুই হাত অচল, কিন্তু পা দুটি সচল। জন্মগত শারীরিক এই প্রতিবন্ধকতা আজিজুল হক মুন্নার। এ নিয়ে চলতে-ফিরতে কোনো সমস্যা হয় না তার। পরিবারের সদস্যরা তাই তাকে স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। হাতে নয়, পা দিয়ে লেখা রপ্ত করে আজিজুল। পায়ে লিখেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় জিপি-৫ পেয়ে প্রথম তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সে। এবার একইভাবে পায়ে লিখে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেল আজিজুল।

এবারের এসএসসি পরীক্ষায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সৈয়দ কুতুবজালাল উচ্চবিদ্যালয় থেকে অংশ নেওয়া ১০৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন ছিল আজিজুল। পাস করেছে ৯৭ জন। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আজিজুলসহ জিপিএ-৫ পেয়েছে আরও তিনজন।

সৈয়দ কুতুবজালাল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আজিজুল পরীক্ষা দিয়েছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আজিজুলের ক্লাস রোল ১ ছিল। তাকে কেউ টপকাতে পারেনি।

দক্ষিণ সুরমার খালেরমুখ গ্রামে বসবাসকারী আজিজুলের মা-বাবা দুজনই শিক্ষক। তিন ভাইবোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। দুই হাত সরু হওয়ায় কোনো কাজ করতে পারে না সে। কিন্তু পড়াশোনায় আগ্রহ দেখে মা-বাবা তাকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন।

বাঁ হাতের সঙ্গে বাঁ পা এক করে লিখে সে। লিখতে কষ্ট ও সময় দুটোই তো বেশি লাগার কথা-এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজুল বলে, ‘অভ্যাস অইগেছে।’ পরীক্ষার সময় দেখা গেছে, তার লেখা অন্য শিক্ষার্থীদের হাতের লেখার চেয়ে সুন্দর। পড়াশোনা শেষে বড় হয়ে বিজ্ঞানী হতে চায় আজিজুল।

পা দিয়ে দীর্ঘ সময় লিখতে গিয়ে প্রায়ই শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয় আজিজুলকে। এ জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন বাবা ফজলুল হক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দুই হাতে একটি অস্ত্রোপাচারের পর আজিজুলের হাত সচল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু আর্থিক সংগতি না থাকায় ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি।