Thank you for trying Sticky AMP!!

ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থীদের কোনো মার্কা নেই

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জন্য কোনো মার্কা বরাদ্দ করা হবে না। ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের ব্যালট পেপারে পদগুলোতে চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের নাম থাকবে। কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীর নামের ওপর সিল দিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে।

ডাকসু নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমান শুক্রবার প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট পেপারে প্যানেলের কোনো ব্যাপার থাকবে না। শুধু পদ অনুযায়ী প্রার্থীদের নাম থাকবে।

ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে নির্বাচন হবে ২৫টি পদে আর প্রতিটি হল সংসদে হবে ১৩টি পদে। ফলে একজন ভোটার মোট ৩৮টি ভোট দিতে পারবেন।

ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি (ভিপি) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সময়ও ডাকসু নির্বাচনে কোনো মার্কা ছিল না, মার্কার আসলে প্রয়োজনও নেই। তবে ব্যালট পেপারে প্রার্থীদের তালিকা প্যানেল আকারে সাজানো থাকত।’

শুক্রবার ছুটির দিন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কার্যালয়গুলো থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো বিভাগে স্নাতক বা স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত স্নাতকোত্তর শেষে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর (সন্ধ্যাকালীন) কিংবা এমফিলে অধ্যয়নরত ৩০ বছরের বয়সসীমার মধ্যে থাকা যেকোনো শিক্ষার্থী হলের পরিচয়পত্র দেখিয়ে মনোনয়নপত্র নিতে পারবেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র নেওয়া যাবে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে।

ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো এখনো মনোনয়নপত্র নেয়নি। তাঁদের কারোরই প্যানেল চূড়ান্ত হয়নি। ছাত্রলীগের প্যানেল নিয়ে আলোচনা চলছে। প্যানেল চূড়ান্ত করা নিয়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা এখনো চলছে। সংগঠনের বিগত কমিটির একাধিক নেতা জানান, ২৩ বা ২৪ ফেব্রুয়ারি ছাত্রলীগের প্যানেল ঘোষণা করা হবে। প্যানেল চূড়ান্ত হলেই তাঁরা ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের প্যানেল চূড়ান্ত করা নিয়ে আলোচনা চলছে, এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে ২৫ ফেব্রুয়ারির আগেই প্যানেল চূড়ান্ত হবে। এরপরই আমরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করব।’

ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ছাত্রদলের ‘ইতিবাচক মনোভাব’ থাকলেও যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া, নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে করা সাত দফা দাবি পূরণ না হওয়া ইত্যাদি কারণে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সংগঠনটি।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা ইতিবাচক থাকতে চাই। আমাদের প্যানেল চূড়ান্ত করা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা ছাড়া কার্যকর ডাকসু প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে নির্বাচন আয়োজন করা হোক।’

গতকাল বৃহস্পতিবার জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর দুটি মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের প্যানেল চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের কয়েকজন নেতা জানান, ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদের পদবিন্যাস নিয়ে দুই জোটের নেতারা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে যৌথ প্যানেলে ডাকসুর ভিপি (সহসভাপতি) পদ দাবি করা হয়েছে। কোনো কোনো সংগঠন এ দাবিকে সমর্থন করেনি। জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) এক শীর্ষ নেতার নাম আলোচনায় উঠলেও একটি সংগঠন এর বিরোধিতা করেছে। এসব কারণে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দুই জোট। তবে শিগগিরই আলোচনার মাধ্যমে প্যানেল চূড়ান্ত হবে বলে জানান নেতারা। এরপরই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করবেন তাঁরা।