প্রিয় পরীক্ষার্থী, এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীদের জন্য রসায়ন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রসায়ন প্রথম পত্রে রয়েছে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম অধ্যায়ের কিছু অংশের সিলেবাসে পরীক্ষা হবে। এ অধ্যায়গুলোর নির্ধারিত বিষয়ের নির্বাচিত বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে অনুশীলন করতে হবে। বহুনির্বাচনি অংশে থাকবে ২৫টি প্রশ্ন, নম্বর থাকবে ২৫ আর রচনামূলক অংশে আটটি প্রশ্নের মধ্যে পাঁচটি উত্তর করতে হবে। যার পূর্ণমান ৫০। রচনামূলক অংশের প্রতিটি প্রশ্ন চারটি অংশে বিভক্ত। তা হলো- ক, খ, গ ও ঘ। এদের থাকবে ১, ২, ৩, ৪ নম্বর। প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান সমান। প্রতিটি প্রশ্নে ১০ নম্বর করে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় রয়েছে ২৫ নম্বর।
* দ্বিতীয় অধ্যায়—
রসায়ন প্রথম পত্রে প্রতিটি অধ্যায়ের ক ও খ সংশ্লিষ্ট বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকে বেশি। অর্থাৎ প্রকাশ, সমীকরণ, একক মান, আবার গভীরতা সংশ্লিষ্ট বহুনির্বাচনি প্রশ্ন থাকে সেগুলো একটু সময় নির্ভর। তবে সহজগুলো আগে শেষ করে তারপর গণনা নির্ণয়। বহুনির্বাচনি প্রশ্নগুলো দিলে সময়ের সঙ্গে শেষ করা সহজ হয়।
যেমন: দ্বিতীয় অধ্যায়ের একটি অংশে তারই দৈর্ঘ্য নিয়ে আলোচনা রয়েছে। তার একক বিভিন্ন পদ্ধতিতে জানা জরুরি। তেমনিভাবে কোন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের বর্ণ কী, তা–ও আয়ত্তে রাখতে হবে, যা বহুনির্বাচনি ও রচনামূলক দুই ক্ষেত্রেই জরুরি, এ থেকে শোষিত বা বিকিরিত শক্তি, তারই সংখ্যা নির্ণয় করা যায়। এদের প্রত্যেকটি একক জানতে হবে।
এভাবে, বিভিন্ন প্রকার কণা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের রশ্মি ও তাদের প্রয়োগ ভালোভাবে জানতে হবে। বিভিন্ন ধরনের কোয়ান্টাম সংখ্যা, তাদের প্রকাশ, প্রয়োগ ও বিভিন্ন কক্ষপথে মোট অধিটাল সংখ্যা ও e সংখ্যা নির্ণয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই প্রতিটি ক্ষেত্র গভীর মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
এ অধ্যায়ের পলির বর্জন নীতি, হুন্ডের নীতি ও আউফবাউ নীতি সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখবে। কোন শক্তি স্তরে বা অরবিটালে তা P ব্যবহৃত হয়? প্রতিটি e -এর কোয়ান্টাম সেট নির্ণয় করতে পারলে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হবে।
দ্রাব্যতা, দ্রাব্যতা গুণফল; এদের মধ্যে সম্পর্ক ও নির্ণয় করা শিখে নেবে। আবার বিভিন্ন দ্রবণের মিশ্রণে অবক্ষেপ পড়ার সম্ভাবনা অথবা সম্ভব কি না, তা–ও যাচাই করতে হবে।
* তৃতীয় অধ্যায়
দ্বিতীয় অধ্যায়ের পরে আসে তৃতীয় অধ্যায়। এটি তুলনামূলকভাবে বড় ও অনেক কিছু নিয়ে গঠিত, তাই যারা এ বিষয়ে সামগ্রিক প্রস্তুত নিতে পারেনি, তারা এ অধ্যায়ের প্রশ্ন পরে উত্তর করবে। তবে বিভিন্ন ব্লকে মৌলের সংখ্যা, ইলেকট্রন বিন্যাস মৌলের প্রকৃতি বিশেষ নাম, এদের, বিভিন্ন পর্যায় বৃত্ত ধর্মগুলো বিরূপতা রিভিশন দিতে পারলে ভালো হয়।
বিভিন্ন অণু, আয়নের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধন ভৌত অবস্থা, বর্ণ কীভাবে বন্ধনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তা ব্যাখ্যা করতে পারতে হবে। এ অধ্যায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ সমীকরণ। এর সঙ্গে অণু ও আয়নের আকৃতি জড়িত। তাই এ বিষয়ে দখল রাখতে হবে। সেখানে যুক্ত জোড় e-এর প্রভাব যেন মাথায় থাকে। পোলায়ন, পোলারিটির প্রভাবে কীভাবে একটি যৌগ তার মূল ধর্ম থেকে ভিন্নতা দেখায়, তা–ও গুরুত্বপূর্ণ।
* চতুর্থ অধ্যায়
চতুর্থ অধ্যায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখানে সবুজ রসায়ন থেকে শুরু বাফারের কার্যক্রম পর্যন্ত ব্যাপকতা রয়েছে। তাই দ্রবণের ঘনমাত্রা অন্য একক থেকে কীভাবে মোলারিটিতে নেওয়া যায়, তা শিখতে হবে। তবে সাহায্যে দ্রবণের PH, দ্রবণের প্রকৃতি নির্ণয় করা যায়। ভরক্রিয়া সূত্র থেকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা Kp/Uc নির্ণয়ের রাশিমালা প্রতিপাদন, এদের একক নির্ণয়, সম্পর্ক স্থাপনসহ ই-ফ্যাক্টরের মতো বিষয়গুলোয় নজর রাখতে হবে। মানুষের রক্তের PH নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও বিভিন্ন কিছুর PH সীমা জানা জরুরি। ভ্যানডার ওয়ালস আর্কষণ বল, ইলেকট্রন আসত্তি, ইলেকট্রন বিন্যাস, গ্রিন কেমিস্ট্রি , বিক্রিয়ার হার ইত্যাদি বিষয়ে ভালো করে পড়তে হবে।
* পঞ্চম অধ্যায়
এ অধ্যায়ের খাদ্যনিরাপত্তা ও প্রিজারভেটিভ অংশ এবারের সিলেবাসে রয়েছে। তাই এ সংশ্লিষ্ট কিউরিং, পিকলিং একটি অক্সিজেন্ট, চিলোটিং প্রজেক্ট, একটি মাইক্রোভিয়ালের মতো বিষয়গুলো খুব গুরুত্বসহ জানতে হবে। এ ছাড়া কোন ধরনের প্রিজারভেটিভ কোন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এদের ব্যবহারের সীমা, কার্যকারিতা, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও ক্ষেত্র বিশেষে বিষক্রিয়া জানতে হবে। ভিনেগারের সংযুক্তি, প্রস্তুতি, প্রয়োগ ও জনপ্রিয়তার কারণ জানতে হবে। যেমন জানতে হবে—লবণ, চিনি ও ভিনেগারের প্রিজারভেটিভ হিসেবে কার্যক্রমের কথা। খাদ্যনিরাপত্তায় রসায়নের গুরুত্ব ও খাদ্য সংরক্ষণ কৌশল বিষয়ে ভালো করে পড়বে, এখান থেকে বহুনির্বাচনি ও রচনামূলক প্রশ্ন আসার রেশ সম্ভাবনা রয়েছে।
* লেখক: তাপসী বণিক, সহযোগী অধ্যাপক, কোডা কলেজ, ঢাকা