বিদেশে পড়াশোনা বা চাকরির জন্য শিক্ষাগত সার্টিফিকেট যাচাই করা অনেক সময় ও ব্যয়বহুল ছিল। দূতাবাস বা বিদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার যেতে হতো, যা শিক্ষার্থী ও প্রবাসীদের জন্য অনেক ঝক্কি ও চাপের কারণ ছিল। সরকার এখন সম্পূর্ণ অনলাইনে সনদ যাচাই ও অ্যাপোস্টিল সিস্টেম চালু করেছে। এটি বিদেশগামী শিক্ষার্থীসহ অন্যদের কাজ সহজ করবে।
গতকাল শনিবার (২৩ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ দাবি করা হয়েছে। যদিও বিদেশে উচ্চশিক্ষার আবেদন কিংবা শিক্ষাগ্রহণের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বিভিন্ন সনদপত্রের সত্যায়নের ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই চালু হয়েছে। এখন সরকার এ পদ্ধতি আরও সহজ করার ফলে অর্থ সাশ্রয়সহ যে সুবিধা পাওয়া যাবে তা জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছে। পোস্টে অন্তত ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয়ের কথা বলা হয়েছে।
ফেসবুকে পোস্টে বলা হয়, বিদেশে পড়াশোনা বা কাজের জন্য শিক্ষাগত সার্টিফিকেট যাচাই করা সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল ও জটিল প্রক্রিয়া ছিল। এতে দূতাবাস ও বিদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার যেতে হতো, যা অনেকের জন্য চাপ, বিলম্ব ও অতিরিক্ত খরচের কারণ হতো। যদি বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও চাকরির জন্য সব সার্টিফিকেট অনলাইনে যাচাই করা যায়, তাহলে বছরে অন্তত ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এর ফলে বাংলাদেশ এখন সম্পূর্ণ অনলাইনে সনদ যাচাই এবং অ্যাপোস্টিল সিস্টেম চালু করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পাবলিক ডকুমেন্ট যাচাইয়ের জন্য অ্যাপোস্টিল সনদ দেবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও নাগরিকেরা অনলাইনে নিজেদের শিক্ষাগত সনদ ডিজিটালি যাচাই করাতে পারবেন। এতে শিক্ষার্থী ও নাগরিকেরা তাঁদের শিক্ষাগত কাগজপত্র ডিজিটালি যাচাই করতে পারবেন, যার ফলে দূতাবাস বা বিদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার দরকার হবে না, সময় বাঁচবে, খরচ কমবে, জালিয়াতি রোধ হবে এবং এসব সনদ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এ প্রক্রিয়ার ফলে-
* দূতাবাস বা বিদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে শারীরিকভাবে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না, ফলে সময় ও শ্রম বাঁচবে;
* ম্যানুয়াল সত্যায়ন ও যাচাইপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ফি কমে যাবে;
* ডিজিটাল যাচাইয়ের মাধ্যমে জাল সনদ ও প্রতারণা কমবে। এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে বিদেশে পড়াশোনা, চাকরি ও অভিবাসনের জন্য যাচাইপ্রক্রিয়া সহজ হবে।
এই ডিজিটাল সিস্টেম ব্যয়বহুল ও ঝামেলাপূর্ণ কাগজপত্রের প্রক্রিয়া দূর করে শিক্ষার্থী ও কর্মীদের দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে তাঁদের ডকুমেন্ট যাচাই করাতে সাহায্য করবে, যা বৈশ্বিক সুযোগ পেতে সহায়ক হবে। এতে জাল সনদ রোধ হবে এবং পুরো প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা বাড়বে, তরুণদের স্বপ্নপূরণের পথে এটি সহায়ক হবে।
অ্যাপোস্টিল (Apostille) হলো একটি সরকার কর্তৃক জারি করা প্রামাণ্য স্ট্যাম্প বা সার্টিফিকেট, যা কোনো নথিপত্রের সত্যতা নিশ্চিত করে। এটি একটি আন্তর্জাতিক সিস্টেম। এ প্রক্রিয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ যখন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের নথিপত্র বিদেশে ব্যবহার করতে চায়। একজন বাংলাদেশি নাগরিক যদি বিদেশে পড়াশোনা, চাকরি বা অভিবাসনের জন্য তাঁদের শিক্ষাগত সনদ, জন্মসনদ বা বিবাহ সনদ ব্যবহার করতে চান, তবে সেই নথি অ্যাপোস্টিল করা প্রয়োজন হতে পারে।