
যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ নিয়ে এসেছে কমনওয়েলথ পিএইচডি স্কলারশিপ। স্বল্পোন্নত কমনওয়েলথভুক্ত দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়িত (ফুল ফান্ডেড) বৃত্তির আবেদন চলছে।
২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য বিদেশে বিনা খরচে পিএইচডি করতে চাওয়া আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্যের এই বৃত্তি দুর্দান্ত একটি সুযোগ। এটি অর্থায়ন করে ইউকে ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (FCDO)। এ বৃত্তি শিক্ষার্থীদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করবে। বৃত্তিপ্রাপ্তরা দেশে ফিরে উন্নয়নের অগ্রদূত হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাবেন।
বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা কমনওয়েলথ পিএইচডি স্কলারশিপে আবেদন করে। এ বৃত্তির মূল লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে সহযোগিতা ও সমন্বয় জোরদার করা। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য বৃত্তিটি ছয়টি বিভাগে দেওয়া হবে—
১. উন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
২. জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও সক্ষমতা উন্নয়ন
৩. উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা কার্যক্রমকে উৎসাহিত করা
৪. বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা ও সুশাসন জোরদার
৫. সংকটে সহনশীলতা বৃদ্ধি ও দ্রুত সাড়া দেওয়া
৬. অ্যাকসেস, অন্তর্ভুক্তি ও সুযোগ বৃদ্ধি
কমনওয়েলথ পিএইচডি স্কলারশিপ ২০২৬ সম্পূর্ণ অর্থায়িত। বৃত্তিপ্রাপ্তদের জন্য থাকছে:
—নিজ দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে আসা ও ফেরার জন্য পূর্ণ বিমান ভাড়া
—পূর্ণ টিউশন ফি
—মাসিক ভাতা ১ হাজার ৪৫২ পাউন্ড এবং লন্ডন মেট্টোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে ১ হাজার ৭৮১ পাউন্ড
—প্রয়োজনে শীতের পোশাক ভাতা
—আন্তর্জাতিক একাডেমিক ভ্রমণের জন্য স্টাডি ট্রাভেল গ্রান্ট
—অনুমোদিত ক্ষেত্রে ফিল্ডওয়ার্কের জন্য একটি রিটার্ন টিকিট
—মাঝামাঝি সময়ে নিজ দেশে ভ্রমণ খরচ
—প্রযোজ্য ক্ষেত্রে স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানের জন্য ভাতা
—শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা
দেশ: যুক্তরাজ্য
বৃত্তির মেয়াদ: ৩ বছর
আবেদনের শেষ তারিখ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫
যোগ্য দেশের তালিকা: বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নাইজেরিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, উগান্ডা, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, গাম্বিয়া, সিয়েরা লিওন, মালাউই, মোজাম্বিক, ক্যামেরুন, লেসোথো, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, কিরিবাতি, টোগো ও টুভালু।
আবেদনের জন্য প্রার্থীদের অবশ্যই নিম্নলিখিত শর্ত পূরণ করতে হবে—
এই বৃত্তির জন্য আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক নয়। তবে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী কিছু ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণপত্র লাগতে পারে।
—একাডেমিক সাফল্য
—গবেষণা পরিকল্পনার মান
—নিজ দেশের উন্নয়নে সম্ভাব্য অবদান
—যোগ্য কমনওয়েলথ দেশের নাগরিক, শরণার্থী বা ব্রিটিশ প্রোটেক্টেড পারসন হতে হবে।
—সেপ্টেম্বর ২০২৬-এ যুক্তরাজ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হতে হবে।
—অন্তত আপার সেকেন্ড-ক্লাস অনার্স ডিগ্রি (২:১) বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মাস্টার্সসহ লোয়ার সেকেন্ড-ক্লাস ডিগ্রি থাকতে হবে।
—যুক্তরাজ্যের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি বা এমফিল (পিএইচডিতে রূপান্তরিত) প্রোগ্রামে পূর্বে নিবন্ধিত থাকা যাবে না।
—নিজ দেশ বা অন্য কোথাও বর্তমানে পিএইচডি বা এমফিল (পিএইচডিতে রূপান্তরিত) প্রোগ্রামে নিবন্ধিত থাকা যাবে না।
—অন্তত একটি যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্ভাব্য সুপারভাইজারের সমর্থনপত্র থাকতে হবে।
—নিজ খরচে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য না থাকার প্রমাণ দিতে হবে।
—সব নথি নির্ধারিত ফরম্যাটে জমা দিতে হবে।
আবেদনের সময় জমা দিতে হবে—
—নাগরিকত্ব বা শরণার্থী হওয়ার প্রমাণপত্র
—সব উচ্চশিক্ষার সম্পূর্ণ ট্রান্সক্রিপ্ট
—কমপক্ষে দুই ব্যক্তির রেফারেন্স লেটার
—সম্ভাব্য যুক্তরাজ্যের সুপারভাইজারের সমর্থনপত্র (অফারলেটার)
—সর্বোচ্চ ১০টি প্রকাশনা ও পুরস্কারের তালিকা
—কর্মজীবনের বিস্তারিত তথ্য
যেভাবে আবেদন করবেন—
১। সরাসরি সিএসসিতে নয়, বরং যোগ্য মনোনয়ন সংস্থা (nominating body)–এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
—জাতীয় মনোনয়ন সংস্থা (National Nominating Agencies)
—নির্বাচিত এনজিও বা চ্যারিটি সংস্থা
২। মনোনয়ন সংস্থার আবেদনপ্রক্রিয়ার পাশাপাশি সিএসসি অনলাইন পোর্টালেও আলাদা আবেদন জমা দিতে হবে।
৩। কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের ২০২৬ সালের পিএইচডি আবেদনপত্র পূর্ণাঙ্গভাবে পূরণ করতে হবে।
৪। সময়মতো সব নথি জমা দিতে হবে।
প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে তিনটি বিষয়ে:
—একাডেমিক সাফল্য
—গবেষণা পরিকল্পনার গুণগত মান
—নিজ দেশের উন্নয়নে সম্ভাব্য প্রভাব
আবেদনের শেষ তারিখ: ১৪ অক্টোবর ২০২৫
প্রোগ্রাম শুরু: সেপ্টেম্বর ২০২৬
ফলাফল ঘোষণা: জুলাই ২০২৬
*আবেদনের বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন