জামাই আদর!

ঈদে জামাইদের একটা বাড়তি কদর থাকে। উপহার, সালামি আর বাড়তি খাওয়াদাওয়া—সবকিছুতেই ‘এক্সট্রা খাতির’ তাঁদের জন্য। গেল বছর অনেক তারকা বিয়ে করেছেন। বিয়ের পরে যথারীতি জামাইদের নিয়ে পালন করেছেন প্রথম ঈদ। কেমন কাটল এবারের ঈদ। তারকা জামাই বা তারকাদের জামাইরা জানিয়েছেন সেই জামাই আদরের অভিজ্ঞতা।
ঈদের দিন রিকশায় ঘুরেছেন নাঈম ও নাদিয়া
ঈদের দিন রিকশায় ঘুরেছেন নাঈম ও নাদিয়া

আমার সাইজের একটা পাঙাশ মাছ এনেছে
নাঈম
অভিনয়শিল্পী ও মডেল, অভিনয়শিল্পী নাদিয়ার স্বামী

আমার শ্বশুর-শাশুড়ি, মানে নাদিয়ার বাবা-মা দেশের বাইরে থাকেন। ভেবেছিলাম ঈদটা নিজেদের মতো করে কাটাতে হবে। কিন্তু সে সুযোগ দেননি দেশে থাকা নাদিয়ার সব আত্মীয়স্বজন। ঈদের দিন থেকে দাওয়াতের ওপরই আছি। নাদিয়ার দুলাভাইয়ের বাসাতেই দুই দফা দাওয়াত খেতে হয়েছে। তার মামার বাসা থেকে শুরু করে তাবৎ আত্মীয়স্বজন দাওয়াত দিয়েই যাচ্ছেন। আর কে কী খাওয়াবেন, তার একটা প্রতিযোগিতা তো ছিলই। অনেকে জেনে গেছে, আমি কাঁটাওয়ালা মাছ খেতে পারি না। তাই এক বাসায় আমার সাইজের একটা পাঙাশ মাছ এনেছেন। এত বড় পাঙাশ কোথায় পেলেন কে জানে। জামাই হওয়ার এটাই সম্ভবত মজা! তবে ঈদের দিন আমি আর নাদিয়া রিকশায় করে ঘুরে বেড়িয়েছি। ফাঁকা ঢাকায় বউকে পাশে বসিয়ে রিকশায় ঘুরে বেড়ানো যে কত আনন্দের, এটা বোঝাতে পারব না।

নিলয় ও শখ

পুরান ঢাকার খাবার মানে তো বোঝেন!
নিলয়
মডেল ও অভিনেতা, শখের স্বামী
জামাই হিসেবে এটাই আমার প্রথম ঈদ। আমার বাবা-মা দেশের বাইরে আছেন। তাই ঈদের নামাজ পড়েই চলে গিয়েছিলাম গেন্ডারিয়ায় আমার শ্বশুরবাড়ি। ‘শ্বশুরবাড়ি মধুর হাঁড়ি’ ব্যাপারটির অভিজ্ঞতা আগেই ছিল। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে প্রথম ঈদ। সে তো দারুণ ব্যাপার। ঈদে যেন এটা আরও বেশি করে টের পেলাম। এমন কোনো খাবার নেই, যা সামনে আনা হয়নি। পুরান ঢাকার খাবার মানে তো বোঝেন। ভয়াবহ কাণ্ড। আমার শাশুড়ি খুব ভালো রান্না করেন। তাঁর কাছ থেকে শখও দারুণ সব রান্না শিখেছে। মা আর মেয়ে মিলে এমন সব মজার খাবার রান্না করেছে যে কোনটি রেখে কোনটা খাব, সেটা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। এবারের ঈদে আরও একটা অভিজ্ঞতা হলো—শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে সালামি পাওয়া। দুজনই ‘হ্যান্ডসাম’ সালামি দিয়েছেন। আমার একটা ছোট্ট শালা বাবু আছে। তাকেও আবার আমার দিতে হয়েছে। তবে খারাপ লেগেছে, এত মজার মজার সব খাবার রেখে ঈদের পরদিনই শুটিংয়ের জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলাম।

নাদিয়া মিম ও শাফায়াত আলী

শাশুড়ির হাতের গরুর মাংস সাবাড় করেছি
শাফায়াত আলী
নাদিয়া মিমের স্বামী

আগে নিজের বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করতাম। এবারের ঈদে নতুন এক জোড়া বাবা-মা পেয়েছি। তো এই চার বাবা-মার সঙ্গে ঈদ করার মজাটা অন্য রকম। ঈদের দিন বিকেলে গিয়েছিলাম শ্বশুরবাড়ি। যা হয় আরকি, খাওয়াদাওয়ার একটা দাপট ছিল। আমার শাশুড়ি দারুণ রান্না করেন। তাঁর হাতের গরুর মাংস একবার মুখে দিলে পুরোটা শেষ না করা পর্যন্ত ওঠা কঠিন। সেই গরুর মাংস সাবাড় করেছি। আমার জন্য আবার বেশ কিছু চায়নিজ আইটেমও করেছিলেন। সব মিলিয়ে খাওয়াদাওয়ার একটা মহোৎসব চলেছে। কিন্তু এক মাস রোজা রেখে দিনের বেলায় খাওয়ার অভ্যাসটা কমে গিয়েছিল। সেটা আবার সচল হয়েছে আমার শাশুড়ির কল্যাণে। আমার দুজন শ্যালিকা আছে। ওদের সালামি দিতে হয়েছে। মোট দুদিন ছিলাম শ্বশুরবাড়ি। তাতেই বুঝেছি জামাই আদর কাকে বলে!
গ্রন্থনা: হাবিবুল্লাহ সিদ্দিক