প্রশংসা পেল মণিপুরি নাচ

অনেক দিন হলো মণিপুরি নাচ শিখছেন বাংলাদেশের মণিপুরি সম্প্রদায়ের তরুণেরা। মাসে দুবার শ্রীমঙ্গলের কমলগঞ্জে গিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসেন সাংস্কৃতিক সংগঠন সাধনার শিল্পীরা। মণিপুরি থিয়েটারের সঙ্গে যৌথভাবে ‘ধ্রুমেল’ নামে এই কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন। এত দিনে শেখা নিজেদের নাচ নিয়ে আন্তর্জাতিক উৎসবে হাজির হলেন তাঁরা।
গতকাল শুক্রবার খাজুরাহো নৃত্য উৎসবের পঞ্চম দিন বিকেলে মণিপুরি নাচ পরিবেশন করে বাংলাদেশ। নিজেদের ধর্মীয় রীতিতে লেই চন্দন দিয়ে শুরু করে নৃত্য অর্পণ, হলি পালা, শিববন্দনা, পুং চালন ও বসন্ত রাশ পরিবেশন করেন তাঁরা। কৃষ্ণকুমারী দেবীর কাছে পাওয়া বৈষ্ণব পদাবলির কীর্তনগুলো শাস্ত্রীয় ঘরানায় সাজিয়ে যুক্ত করা হয়েছে ‘নৃত্য অর্পণ’ নামের এই পরিবেশনায়। নতুন প্রযোজনার প্রথম পরিবেশনা আন্তর্জাতিক উৎসবে উপস্থাপন করতে পেরে দারুণ উদ্বেলিত এর নির্দেশক স্যুইটি দাস চৌধুরী।
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে ছিল বেহুলার লাচারি, সৈয়দ শামসুল হকের ‘চম্পাবতী’র অংশবিশেষ ও বাংলাদেশের বিয়ের নাচ। উপচে পড়া দর্শকের সামনে পরিবেশিত হয় এর দুটি প্রদর্শনী। এতে হাজির হয়েছিলেন ভারতের কিংবদন্তি নাট্যজন রতন থিয়াম। বাংলাদেশের এই পরিবেশনার দারুণ প্রশংসা করেন তিনি। উৎসবে গতকাল সকালে নৃত্য সংলাপে তিনি শিশুদের স্কুলগুলোতে নৃত্য, সংগীত, অঙ্কন ও নাটকের নিয়মিত চর্চা রাখার পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশের নাচে মুগ্ধ হয়ে মার্কিন চিত্রশিল্পী প্যাট্রিসিয়া গুডরিচ জানিয়েছেন, কাছ থেকে দেশটির সংস্কৃতির আস্বাদ নিতে তিনি বাংলাদেশে যাবেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শিবরাত্রি উপলক্ষে গতকাল খাজুরাহো নৃত্য উৎসবে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। মূল মঞ্চে ভোপাল, বেঙ্গালুরু, জয়পুর ও দিল্লির শিল্পীরা পরিবেশন করেন কত্থক, ভরতনাট্যম ও কুচিপুড়ি নাচ। আজও সেখানে থাকবে ওডিশি, কত্থক ও মণিপুরি নাচ। বাংলাদেশ পরিবেশন করবে রবীন্দ্রনাথের গানের নৃত্যনাট্য ‘আয় আমাদের অঙ্গনে’।
উৎসবের আয়োজক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীত ও কলা একাডেমির সহকারী পরিচালক রাহুল রাস্তগি জানালেন, বাংলাদেশের পরিবেশনাগুলো দারুণ দর্শকনন্দিত হচ্ছে। তাঁদের প্রত্যাশা, দেশটির শিল্পীরা প্রতিবারই এই উৎসবে অংশ নেবেন।