Thank you for trying Sticky AMP!!

রোহিঙ্গা শিবিরে যেভাবে সময় কাটালেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের বিশেষ দূত হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি গতকাল কক্সবাজারে একটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির পরিদর্শনে যান। ছবি: টুইটার থেকে

সাদা টি–শার্ট, কালো প্যান্ট এবং মাথায় সাদা ওড়না পরে হেঁটে টেকনাফের চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরে ঢুকলেন জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বিশেষ দূত অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। কথা বললেন সেখানকার নারী–শিশুদের সঙ্গে। খোঁজখবর নিলেন তাদের ভালো–মন্দের।

রোহিঙ্গাদের জন্য কী ধরনের মানবিক সহায়তা দরকার, তা মূল্যায়নের জন্য গতকাল সোমবার কক্সবাজার হয়ে টেকনাফ যান হলিউডের এই অভিনেত্রী। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে বাংলাদেশ কেমন চ্যালেঞ্জের মুখে আছে, তা–ও জানাবোঝার চেষ্টা করবেন তিনি এই সফরে।

ইউএনএইচসিআর কর্মকর্তারা এই প্রতিবেদককে জানান, গতকাল সকালে ঢাকায় এসেই কক্সবাজার যাত্রা করেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। আর কক্সবাজারে এসে চলে যান রোহিঙ্গা শিবিরে। রোহিঙ্গা ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের প্রতিনিধি হোয়াইক্যং চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া প্রথম আলোর টেকনাফ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, দুপুরে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুল রোহিঙ্গা শিবিরে পৌঁছান অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তিনি সেখানে রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের পালিয়ে আসা এবং নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন। তিনি ওই শিবিরে তিন ঘণ্টা সময় কাটান। বিকেল চারটার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন।

রাখাইনে পূর্বপুরুষের ভিটামাটি ছেড়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এবারই প্রথম দেখা হচ্ছে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির। যদিও ২০১৫ সালে মিয়ানমারে আর ২০০৬ সালে ভারতে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল।

কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ফিরাস আল খতিব গত সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, তিন দিনের কক্সবাজার সফরের শুরুতেই অ্যাঞ্জেলিনা জোলি চাকমারকুলের শিবিরে গিয়ে বিভিন্ন বয়সের রোহিঙ্গাদের কাছে রাখাইন থেকে জীবন হাতে নিয়ে পালিয়ে আসার মর্মস্পর্শী বর্ণনা শুনেছেন। আজ মঙ্গলবার উখিয়া ও কুতুপালংয়ের বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখবেন। তিনি সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে খোঁজ নেবেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। বিকেলে কুতুপালংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের সমস্যার একটি নিরাপদ ও টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে ইউএনএইচসিআর কীভাবে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে পারে, তা নিয়ে তিনি সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

কাকতালীয় হলেও অ্যাঞ্জেলিনা জোলি যখন বাংলাদেশে আসছেন, তখন রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নতুন করে সহায়তার ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। এ মাসের কোনো এক সময় জেনেভায় যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনায় ৯২০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানোর কথা জাতিসংঘের। এক বছরের জন্য ওই অর্থ রোহিঙ্গা এবং কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য খরচ হওয়ার কথা।

অস্কারজয়ী অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে পাদপ্রদীপের আলোয় এনেছে লারা ক্রফট: টম্ব রাইডার। কম্বোডিয়ায় এর দৃশ্যায়নের সময় মানবিক সংকটের ভয়াবহতা সম্পর্কে আর পৃথিবী সম্পর্কে নতুন এক ধারণা জন্মায় জোলির। ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার বিশেষ দূত হিসেবে বিশ্বের সংঘাতকবলিত এলাকায় মানবিকতার আহ্বান জানিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন মি. এন্ড মিসেস স্মিথ, ওয়ান্টেড, সল্ট, আ মাইটি হার্ট ও চ্যালেঞ্জিংয়ের মতো সাড়া জাগানো ছবির এই অভিনেত্রী।

এর আগে গত বছরের ২১ মে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন বলিউড অভিনেত্রী ও ইউনিসেফের বিশেষ দূত সাবেক বিশ্বসুন্দরী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। ওই সময় তিনি উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।