
বলিউডের নামজাদা জাঁদরেল ভিলেনের মধ্যে প্রেম চোপড়া অন্যতম, সেরা তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আজও দর্শক ভুলতে পারে না ‘ববি’ ছবিতে তাঁর সেই সংলাপ, ‘প্রেম নাম হ্যায় মেরা’। ছবিতে প্রায়ই তাঁকে দেখা যায় খলনায়কের ভূমিকায়। তাই দর্শক সব সময় তাঁকে দেখেছেন ঘৃণার চোখে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে ভদ্র এবং অমায়িক মানুষ তিনি। সংস্কৃতিমনস্ক এই অভিনেতা অবসর সময় ‘সায়েরি’র চর্চা করেন। এমনকি মাঝেমধ্যে কলমও নেন তিনি। যা অনেকেরই জানা নেই। গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর ৮২ বছরে পা দিলেন প্রবীণ এই অভিনেতা। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে প্রেম চোপড়া অভিনীত ছবি ‘প্যাটেল কি পাঞ্জাবি শাদি’।
হিন্দি চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মতে, পর্দায় ধর্ষকের ভূমিকায় প্রেমই সেরা। আজ অবধি বলিউডে যত ভিলেন এসেছেন, ধর্ষণের দৃশ্য তাঁর মতো কেউ ফুটিয়ে তুলতে পারেননি। গত শতকের আশির দশকে খলনায়কের চরিত্রে সবচেয়ে চাহিদা ছিল প্রেম চোপড়ার। নিজের অভিনীত ধর্ষণের দৃশ্য সম্পর্কে বলিউডের এই বর্ষীয়ান অভিনেতা বলেন, ‘ফিল্মে আমাকে দেখে মনে হয়, আমি খুবই নিষ্ঠুর। কিন্তু বাস্তবে আমার সঙ্গে অভিনেত্রীদের খুবই ভালো সম্পর্ক। অনেকেই জানতে চান, ধর্ষণের দৃশ্যের সময় আমার কী অনুভূতি হয়। এই ধরনের দৃশ্যে কাজ করার সময় আমি খুব পেশাদার থাকি। আর আমি শুধু ভাবতাম, এটা অভিনয়, এর প্রভাব যেন আমার ব্যক্তিগত জীবনের ওপর না পড়ে।’
কিন্তু তা সত্ত্বেও এই অভিনেতা একবার ৭০ দশকের একটা ছবির ধর্ষণের দৃশ্যের সময় সমস্যায় পড়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই ছবিতে আমার দৃশ্যটা ছিল নায়িকাকে পেছন থেকে শক্ত করে চেপে ধরব। আমি তা-ই করেছিলাম। কিন্তু এই দৃশ্যের সময় সেই নায়িকা ছিলেন অভিব্যক্তিহীন। তাই দৃশ্যটি কয়েকবার করতে হয়েছিল। একসময় দৃশ্যটা ঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। কিন্তু এই দৃশ্যের পর ওই নায়িকা পরিচালককে অভিযোগ করেন যে আমি এত জোরে ওর হাত চেপে ধরেছিলাম তার জন্য তিনি নাকি ব্যথা পেয়েছেন। রেগে পরদিন শুটিংয়ে আসেননি। পরিচালকও তাঁকে বুঝিয়ে আনতে পারেননি।’
প্রেম চোপড়া বলেন, ‘কিছুদিন পর এই ছবির একটা দৃশ্যে সেই নায়িকা আমাকে চড় মারবেন। শুটিংয়ে তিনি আমাকে সজোরে চড় মারেন। তিনি এতটাই জোরে চড় মেরেছিলেন যে পুরো ইউনিট স্তব্ধ হয়ে যায়। পরে আমি পরিচালককে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে তিনি বলেন, এই দৃশ্য নাকি চিত্রনাট্যে ছিল না। সেই নায়িকা বদলা নেবেন বলে জোর করে এই চড় মারার শট ঢুকিয়েছেন।’
বলিউডের এই জনপ্রিয় খলনায়ক আরও বলেন, ‘আগে ধর্ষণের দৃশ্য নিয়ে ছবির নায়িকারা খুব নাটক করতেন। বড় বড় অভিনেত্রীরা আমার সঙ্গে ধর্ষণের দৃশ্য করেছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাঁরা পেশাদার থাকতেন। আর খুব তাড়াতাড়ি এ ধরনের দৃশ্যের শুট শেষ করতেন।’
প্রেম চোপড়া এ বিষয়ে আরও ঘটনা প্রকাশ্যে আনেন। তিনি বলেন, ‘আমি কিছু খলনায়ককে জানি, যাঁরা ছবিতে স্বাক্ষর করার আগে জেনে নিতেন যে এই ছবির নায়িকা অথবা নায়কের বোনের সঙ্গে কোনো ধর্ষণের দৃশ্য আছে কি না। তবেই ছবিতে স্বাক্ষর করতেন। অনেক সময় নিজের প্রভাব খাটিয়ে এ ধরনের দৃশ্য যুক্ত করতেন। আমি তা কখনোই করিনি।’
প্রেম চোপড়ার নিজের অভিনীত সবচেয়ে প্রিয় ধর্ষণের দৃশ্য ‘আসপাস’ সিনেমায়। এই ছবিতে তাঁর সঙ্গে এই দৃশ্যে ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হেমা মালিনী।