ভারতের চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় এমন এক অভিনেতা ছিলেন, যিনি খলনায়ক হিসেবেই দর্শকের মন জয় করেছিলেন। তাঁর অভিনয়জীবন ছিল ৪০ বছরেরও বেশি। অভিনয় করেছেন দুই শতাধিক ছবিতে। জন্মেছিলেন এক ধনী কাশ্মীরি পরিবারে। আর অভিনয়জীবনে তিনি একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৩-৪ বার নয়, টানা ৬১ বার!
সম্প্রতি এ অভিনেতার জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করা হচ্ছে তাঁকে। সচ্ছল পরিবার থেকে উঠে এসেও তিনি বেছে নিয়েছিলেন অভিনয়ের কষ্টকর পথ। ১৯৩০ সালে মাত্র ২৬ টাকা সঙ্গে করে মুম্বাইয়ে পাড়ি দেন তাঁর স্বপ্নপূরণে।
ক্যারিয়ারের শুরু
এই অভিনেতা আর কেউ নন—জীবন। ‘ঘর কি ইজ্জত’, ‘মেলা’, ‘ধর্মবীর’ ‘আফসানা’—খলনায়কের চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজও দর্শকের মনে দাগ কেটে আছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনয়ে সমর্থন না পেয়ে বহু কষ্টে পথ চলতে হয় তাঁকে। ছোট ছোট চরিত্র দিয়ে শুরু। পাঁচ বছর সংগ্রামের পর ১৯৩৫ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি ‘রোমান্টিক ইন্ডিয়া’।
বিশ্ব রেকর্ড গড়া সেই চরিত্র
অভিনয়ের প্রতি জীবনের আগ্রহ আর নিষ্ঠাই তাঁকে দ্রুত আলাদা করে তোলে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছিলেন তিনি নারদ মুনির চরিত্রে, যাতে তিনি অভিনয় করেছেন ৬১ বার। এই চরিত্রের সুবাদেই তাঁর নাম ওঠে লিমকা বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে।
খলনায়কের ভাবমূর্তিতে বিপদ!
অভিনয়ের প্রভাব কতটা তীব্র ছিল, তার প্রমাণ একটি ঘটনা। মুম্বাইয়ের বাইরে এক অনুষ্ঠানে স্টেশন থেকে নামতেই একজন নারী আচমকা তাঁর দিকে জুতা ছুড়ে মারেন! অন্য একজন নারীও হাতে জুতা নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দর্শকের চোখে তিনি এতটাই খলনায়ক হয়ে উঠেছিলেন!
‘সুরক্ষা’, ‘লাওয়ারিস’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘স্টেশনমাস্টার’, ‘নাগিন’সহ বহু জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করে স্মরণীয় হয়ে আছেন জীবন। ১৯৮৭ সালে ৭১ বছর বয়সে মুম্বাইয়ে মৃত্যু হয় অভিনেতার।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম