গত বছর ‘কিল’ সিনেমা দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন তরুণ অভিনেতা লক্ষ্য লালওয়ানি। এবার তিনি আবার আলোচনায় শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খানের সিরিজ ‘দ্যা ব্যা***ডস অব বলিউড’ দিয়ে। সিরিজের প্রধান চরিত্র ‘আসমান সিং’ হিসেবে পর্দায় অভিনয় করেছেন তিনি। সম্প্রতি রণবীর আলাহবাদিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য নিজের সংগ্রামের কথা।
টিভি থেকে সিনেমায়
লক্ষ্য বলিউডে অভিষিক্ত হওয়ার আগে ছোট পর্দায় ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। ‘পেয়ার তুনে কেয়া কিয়া’, ‘পরদেশ ম্যা মেরি দিল’-এর মতো ধারাবাহিকের মাধ্যমে তিনি দর্শকের নজর কাড়েন। তবে চলচ্চিত্রে প্রবেশ করার আগে একটি বড় সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সাক্ষাৎকারে লক্ষ্য বলেন, ‘আমি যে সময়ে “পরুস”-এ কাজ করছিলাম, তখন আমাকে এক নতুন শো অফার করা হয়েছিল। তারা প্রতিদিন ১৫ হাজার রুপি দিতে চেয়েছিল। সেই সময় আমি বাবাকে ফোন করলাম। তিনি বললেন, “তোমাকে প্রতিদিন যা দিতে যাচ্ছে এটা তো আমার পুরো মাসের বেতন। তাই নিয়ে নাও।”’
ছোট পর্দার এই এক দিনের কাজের বেতন ছিল যথেষ্ট প্রলোভন, কিন্তু লক্ষ্যর দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন ছিল। তাঁর কাছে এটা কেবল অর্থের হিসাব ছিল না; এটা ছিল স্বপ্ন এবং সুযোগের প্রতীক।
‘৩০ লাখ রুপি মাসিক বেতন ছেড়ে যাওয়া’
রণবীর আলাহবাদিয়ার ইউটিউব চ্যানেলে লক্ষ্য সেই সময়ের কথা স্মরণ করেন, যখন চলচ্চিত্র প্রযোজক রমেশ তারূনি তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। সেই সময়ে তাঁর মাসিক আয় ছিল ৩০ লাখ রুপির মতো (প্রায় ৪০ লাখ টাকা)।
সেই প্রযোজক জানতে চেয়েছিলেন, ‘এত সাহস কোথা থেকে পেলে যে₹৩০ লাখ মাসিক বেতন ছেড়ে ফেলে সিনেমার জন্য ঝুঁকি নিলে?’ লক্ষ্য জানান, ‘আমি জানি না, হয়তো এটা আমার রক্তে আছে। টিভিতে প্রতিদিন আমরা ১৫ হাজার, ২০ হাজার বা₹২৫ হাজার পাই। সেই সময় আমার পারিশ্রমিক ভালো ছিল। কিন্তু মনে হলো—আরও এগোবার সময় এসেছে।”
বলিউডে অভিষেক
লক্ষ্যর বলিউড অভিষেক হয় ‘কিল’ সিনেমার মাধ্যমে। নিখিল নাগেশ ভাট পরিচালিত এবং ধর্মা প্রোডাকশন ও শিখ্যা এন্টারটেইনমেন্টের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই সিনেমায় অভিনয় করেন রাঘব জুয়াল, আশিষ বিদ্যার্থী, হর্ষ চাহয়া, তানিয়া মানিকতলা ও অভিষেক চৌহান। সিনেমাটি দর্শক ও সমালোচকদের কাছে প্রশংসিত হয়।
এরপর লক্ষ্য ওয়েব সিরিজের জগতে পা রাখেন। আরিয়ানের সিরিজেও তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাঘব, ‘কিল’ সিনেমায় তাঁরা নায়ক ও খলনায়কের চরিত্রের অভিনয় করলেও ‘ব্যা***ডস অব বলিউড’-এ তাঁরা করেছেন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর চরিত্র।
সাহসিকতা ও জিরো টলারেন্স
লক্ষ্যর এই যাত্রা কেবল অভিনয় দক্ষতার গল্প নয়, বরং সাহসিকতারও গল্প। তিনি প্রমাণ করেছেন, জীবন ও ক্যারিয়ারের প্রতিটি সিদ্ধান্তে স্বপ্ন এবং সঠিক সময়ের মূল্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ছোট পর্দার বেতন, নিরাপদ চাকরি—সবকিছুকে পেছনে ফেলে তিনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে ঝুঁকি নিয়েছেন। ‘টিভি বা সিনেমা—যেখানে থাকব, নিজের সর্বোচ্চ নিংড়ে দিয়ে কাজ করব। স্বপ্ন পূরণের পথে চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই’, বলেন তিনি।
আরও বড় চ্যালেঞ্জের অপেক্ষা
লক্ষ্য বলিউডে এখনো নতুন হলেও, তাঁর প্রতিভা, পরিশ্রম ও সাহসিকতা তাঁকে বড় পর্দায় প্রতিষ্ঠিত করবে—অনেক সমালোচকের অনুমান। ‘কিল’ ও ‘ব্যা***ডস অব বলিউড’–এর মতো প্রকল্পে কাজ করার পর তিনি আরও বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস